চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ

সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে একজন। শাহ আমানত হল, ২১ সেপ্টেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

আগের সংঘর্ষের জের ধরে আবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। চলে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত।

সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের এ দুটি পক্ষ হলো শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত সিক্সটি নাইন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হল সিক্সটি নাইন পক্ষের নেতা–কর্মীদের ও শাহ আমানত হল সিএফসির নেতা–কর্মীদের দখলে আছে। এ দুটি হল পাশাপাশি। আজ বিকেল পাঁচটায় সরেজমিনে দেখা যায়, সিক্সটি নাইনের নেতা–কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে আর সিএফসির নেতা–কর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেন। উভয় পক্ষের হাতে লাঠিসোঁটা, রামদা ও ইটপাটকেল ছিল। দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় অন্তত পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনা হয়। এসব ঘটনায় সিক্সটি নাইন উপপক্ষের একজন ও সিএফসি উপপক্ষের তিনজন আহত হন। পরে সাড়ে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশ নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে ছিলেন অন্তত ৪০ নেতা–কর্মী। শাহ আমানত হল, ২১ সেপ্টেম্বর

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে চারজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনার সূত্রপাত কে করেছে ও কারা জড়িত, এ বিষয়ে যাচাই–বাছাই চলছে।’

গত ৩১ মে রাতে ও ১ জুন দুপুরে দুই দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ছাত্রলীগের এ দুটি পক্ষ। এতে ১৬ জন আহত হয়েছিল। এ সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে ছিলেন অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর পরিচয় শনাক্ত করে ৩ জুন সংবাদ প্রকাশ করেছিল প্রথম আলো।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ওই দুই দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় সিএফসি ও সিক্সটি নাইন দুটি পক্ষই  হাটহাজারী থানায় মামলা করেছিল। তবে সম্প্রতি মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষই আলোচনা করছিল। এ আলোচনাকে কেন্দ্র করেই কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল ছোড়ে। শাহজালাল হলে সামনের রাস্তায় ছড়িয়ে আছে এসব ইটপাটকেল। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে

সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সিএফসির নেতা–কর্মীদের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা নেই। সিনিয়র নেতার কথা জুনিয়ররা মানে না। যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাই মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করছিলেন। কিন্তু সিএফসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এরপর তাঁরা প্রতিহত করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ সিএফসির নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মামলার বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। এর সঙ্গে সংঘর্ষের কোনো যোগসূত্র নেই। সিক্সটির নেতা–কর্মী আগে তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এরপর তাঁরা প্রতিহত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন মির্জা খবির।