মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ নভেম্বর, ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে।
মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ নভেম্বর, ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে।

মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কিছুই অর্জন করা যায় না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে কিছুই অর্জন করা যায় না। এটা অন্যায়। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির প্রয়োজন।

বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তাদের (জনগণের) পাশে থাকা প্রয়োজন।

আজ মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ সালে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদক তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই তাদের (অগ্নিসন্ত্রাসী) চেতনা জাগ্রত হোক, মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির দরকার হয়। তাদের পাশে থাকতে হয়। জনগণের অকল্যাণ করে, তাদের পুড়িয়ে মেরে, কিছু অর্জন করা যায় না—অন্তত এটা যেন যারা এগুলো করছে তারা বুঝতে পারেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ১৯৭১ সালে। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিত। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং ইদানীং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে।’

ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বীরত্বের ইতিহাস জানানো দরকার। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই আজকে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। কিন্তু একসময় সেটা পারিনি। এখন আমাদের স্বাধীন দেশে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারি।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।

শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধানেরা তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।