আদালতে অসদাচরণ, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন

আদালতে বিচারকদের সঙ্গে গত ছয় মাসে প্রায় ২০টি অসদাচরণের ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় অনেক আইনজীবীর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে আইনজীবীদের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেন কর্মচারীরা। প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন আইনজীবীরা। ৪ জানুয়ারি

কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা খুললেই চোখে পড়ে আদালত বর্জনের খবর। বিচারকের প্রতি অনাস্থা আর কটু মন্তব্যের খবর। মাঝেমধ্যেই একশ্রেণির আইনজীবীর অতি দুর্বিনীত হয়ে ওঠার খবর আসে। আদালতে অচলাবস্থার কারণে বিচারপ্রার্থীরা নিরাশ হয়ে ফিরে যান। এখানে যেন সবাই জিম্মি, কেউ কোনো কিছুর জিম্মাদার নয়।

জেলা পর্যায়ের আদালতগুলোতে রাজনৈতিক আহ্লাদ পাওয়া কিছু আইনজীবীর ‘কুছ পরোয়া নেহি’ আচরণ নতুন কিছু নয়। ধরাকে শুধু সরা জ্ঞান নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁরা ভূমণ্ডলকে কলসির ভাঙা টুকরা বা খাপরারও অধম মনে করছেন। সাধক কবি হাফিজের সেই অমোঘ কাব্যপঙ্‌ক্তি ‘ইয়সা দিন নেহি রহেগা’ আমাদের মনে থাকে না।

গত ছয় মাসে বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অশালীন আচরণের অন্তত ২০টি ঘটনা ঘটেছে বলে পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। সব ঘটনা গায়ে মাখলে এই সংখ্যা যে গোনাগুনির বাইরে চলে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এজলাসের বাইরে আড্ডার টেবিলে বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ বা কটাক্ষের হিসাব কেউ রাখে না। সম্মানিত বিচারকদের সঙ্গে সেখানেও আচার–আচরণে একটা লাগাম থাকা উচিত।

সর্বশেষ ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাসে ‘হট্টগোল’, বিচারক ও আদালতের কর্মচারীদের গালাগাল ও অশালীন আচরণের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পানি রাজধানী পর্যন্ত গড়িয়েছে। দেশসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সেই ঘটনার ভিডিও ক্লিপিং। স্বাভাবিকভাবে এতে নিন্দা জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

অসম্পাদিত (কারও কারও মনে দ্বিধা আছে) এই ভিডিও প্রকাশ না পেলে এ নিয়ে দেশজুড়ে এত উচ্চবাচ্য হতো কি না, বলা যায় না। আদালত–বিচারকের প্রতি এমন আচরণে জড়িত ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল ব্যক্তিরা হয়তো তামাম ঘটনাকে অপপ্রচার বলেই চালিয়ে দিতেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এসে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের একজন সে রকম বক্তব্য কিছু দিলেন বলে মনে হলো। তিনি দাবি করলেন, ‘গালিগালাজ, তুই–তোকারি’ করা হয়েছে বিচারকের সঙ্গে নয়, তাঁর পিয়নের সঙ্গে। ‘কারণ, সে আমাদের ছবি তুলছিল।’

এজলাসে বিচারকাজ পরিচালনায় বাধা দেওয়ার এমন অনভিপ্রেত ঘটনার প্রতিবাদে ফেসবুক ব্যবহারকারী বিচারকেরা তাঁদের প্রোফাইল ছবির জায়গায় কালো রং লেপে দিয়েছেন। অপমানিত ও লাঞ্ছিত বিচারক সর্বোচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে বিচারকের সঙ্গে অশালীন ও অসদাচরণের ব্যাখ্যা জানতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি- সম্পাদকসহ (প্রশাসন) তিন আইনজীবীকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে তাঁদের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ওই ঘটনায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। তিন আইনজীবী হলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা, সম্পাদক মো. আক্কাস আলী ও আইনজীবী জুবায়ের ইসলাম।

আবার এজলাস চলাকালে জেলা জজ শারমিন নিগারের নামে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও বিচারকাজ ব্যাহত করার অভিযোগে ১০ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ আইনজীবীর প্রতি আদালত অবমাননার রুল দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। তাঁদের ২৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে কিছু আইনজীবীর আচরণের ঘটনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকেরও ‘খুব খারাপ লেগেছে’। প্রথমে তিনি বলেছিলেন, বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনা হয়েছে। নিশ্চয় আদালত ব্যবস্থা নেবেন। পরে গত মঙ্গলবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা বার কাউন্সিল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা রাজধানীর গুলশানের কার্যালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা পুরো ঘটনা আইনমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। আইনমন্ত্রী শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে গতকাল আবার তৃতীয় দফায় আরও তিন দিন আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি ক্রমো আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ‘আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বার কাউন্সিলের কর্তাব্যক্তিরা মনে করেন, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। আমাদের নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের মনে রাখা ভালো, কার্পেটের নিচে ময়লা রাখলে ময়লা দূর হয় না, বরং তা পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে খুলনায়, ১৭ অক্টোবর পিরোজপুরে, ১৩ জুন লক্ষ্মীপুরে বিচারকদের মানহানির চেষ্টা হয়েছে। এসব ঘটনায় হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। অনেক ঘটনা স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। ফলে ঢাকা পর্যন্ত গড়ায় না বলে অনেক ঘটনা জানা যায় না।

শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ কি ‘স্বাভাবিক’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক বিচার চেয়েছেন। আগে অসদাচরণের শিকার বিচারকেরাও বিচার চেয়েছিলেন। সব আবেদনই আমলে নিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। আদালত অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সেসব পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আদালতে তলব করে দুর্বিনীত আইনজীবীকে সমঝে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আদালতে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে তাঁরা হাসিমুখে ঘরে ফিরেছেন। একের পর এক ক্ষমার নজির কি অন্য আইনজীবীদের বেপরোয়া হয়ে ‘বিখ্যাত’ হতে উৎসাহিত করছে?

গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ) নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবী। আদালতে বিচারকাজ চলার সময় দলবল নিয়ে আদালতে ঢুকে বিচারকের কাছে অন্য এক মামলায় তাঁর আবেদন নামঞ্জুরের কারণ জানতে চান। বিচারকের সঙ্গে আদালতে প্রকাশ্যে বাহাস চলার সময় আইনজীবী বলেন, ‘কৈফিয়ত চাচ্ছি, কারণ আপনি যখন টাকা নিয়ে, ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে সিদ্ধান্ত দেন, সেটার তো জবাব আমরা চাই না।’ একপর্যায়ে বিচারকের উদ্দেশে খুলনা বার সভাপতি বলেন, ‘আমরা আদালত বর্জন করব। আমরা গণমাধ্যমের সামনে প্রমাণ করব, আপনি দুর্নীতিবাজ। আপনার বিরুদ্ধে যা যা করা দরকার, আমরা করব। আপনার যা করার আছে, আপনি করেন...।’ এরপর অশালীন কথা বলতে বলতে তাঁরা আদালত ত্যাগ করেন। আদালত ত্যাগের সময় দরজায় আঘাত করেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর বিচারক নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। বিচারকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আদালত অবমাননার রুল জারি করে তিন আইনজীবীকে তলব করেন। গত ২২ নভেম্বর তাঁরা হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। হাইকোর্ট তাঁদের ক্ষমা করলেও ভর্ৎসনা করেন। খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির উদ্দেশে আদালত বলেছিলেন, ‘আপনি শুধু আইনজীবী সমাজেরই নয়, খুলনার কলঙ্ক।’

একইভাবে গত বছরের ১৭ অক্টোবর পিরোজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) বিচারিক কাজে বাধা, হুমকি ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে তাঁকে তলব করেন হাইকোর্ট। গত ১৫ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেন তিনি। আদালতকে প্রতিশ্রুতি দেন, আর কখনো এমন ঘটনা ঘটবে না।

ক্ষমা করলেও আদালত আলাউদ্দিনকে বলেন, ‘আপনি কোনো সাধারণ আইনজীবী নন। আপনি পিরোজপুরের পিপি, আইনজীবী নেতা। আপনারা যদি বিচারককে, আদালতকে সম্মান না করেন, তাহলে তো সাধারণ মানুষ সম্মান করবে না। আদালতের প্রতি, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে গেলে তো কেউ বাঁচবেন না। আমরা যদি আপনার আচরণ মেনে নিই, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কী বার্তা যাবে? বিচারকের সঙ্গে আপনার এই আচরণের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে, তার খেসারত দিতে হবে। এতে বিচার বিভাগের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আপনারও তো অনেক ক্ষতি হয়েছে। এটা তো আপনার জীবনের বড় দুর্ঘটনা।’

বেপরোয়া আচরণ কি শুধু জেলা আদালতে?

অগ্রহণযোগ্য আচরণ শুধু অধস্তন আদালতের চৌহদ্দিতে আটকে নেই। আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে ২০১১ সালে একটি রাজনৈতিক দলের অনুসারী ১৩ আইনজীবীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে বিশৃঙ্খলা, ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল। সে সময় তাঁদের আইন পেশা চালিয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পরে অবশ্য অভিযুক্ত আইনজীবীরা হাইকোর্টের যে বেঞ্চে বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছিল, সেই বেঞ্চে গিয়ে তাঁদের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার শর্তে ক্ষমা পেয়েছিলেন।

আদালতে হইচই, আস্ফালন, চিৎকার–চেঁচামেচি ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারেও বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার কমপক্ষে দুটি ঘটনা সম্প্রতি আমলে নেন আদালত। দুটি ঘটনাই ঘটিয়েছিলেন উচ্চ আদালতের দুজন আইনজীবী। দুজনকেই আদালত সাবধান করে ক্ষমা করে দেন।

কেন এমন ঘটছে

অনেকেই মনে করেন, আইনজীবীর সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে, তাঁদের গুণগত মান সেভাবে বাড়েনি। আইনজীবীরা আদালত বা বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে কীভাবে আচরণ করবেন, তার একটা নীতিমালা আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে এই নীতিমালা মানা হয়নি।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও শিক্ষক শাহদীন মালিক গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আইন পেশার মান এখন নিম্নগামী। এর অন্যতম কারণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বার কাউন্সিল থেকে সনদ দিতে যে যোগ্যতার প্রয়োজন, তার অনেকটা শিথিল করা হয়েছে। মানসম্মত আইনজীবী বের হচ্ছে না। আইনজীবীদের শিক্ষার মানও নিম্নমুখী। সবকিছু মিলিয়ে এ পেশায় একটা জটিল অবস্থা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে মাসের খরচের জন্য যথেষ্ট মামলা আইনজীবীরা না পেলে এর প্রভাব তো পেশার মধ্যে পড়তে বাধ্য।

 রাজনীতির বাইরে থাকা আইনজীবীদের কেউ কেউ মনে করেন, আইনজীবীদের অতিমাত্রায় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়া বর্তমানের দমবন্ধ পরিস্থিতির অন্যতম কারণ। যেসব আইনজীবী বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকেন তাঁরা মনে করেন, তাঁরা ক্ষমতাবান। সেই ক্ষমতাটা তাঁরা জায়গা–অজায়গা, যখন-তখন খাটাতে চান। বিচারক তাঁদের মক্কেল কোনো আসামিকে জামিন না দিলে বা কোনো একটা অনিয়মের ব্যাপারে কথা বললে ওই সব আইনজীবী সেটা সহ্য করতে পারেন না। তখনই ঘটে বিপত্তি। নিজেদের রাজনীতির ক্ষমতা তাঁরা বিচার বিভাগেও প্রয়োগ করতে চান।

আইন ও বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মনে করেন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থার স্বার্থে কারও কাজে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন জেলায় বার ও বেঞ্চের মধ্যে যে ধরনের তিক্ততার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তাতে বিচারব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিচার বিভাগের স্বার্থে যিনিই আইন লঙ্ঘন করুন, তাঁকে জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

সংকটের মূল কারণ অনুসন্ধান করতে চাইলে বার কাউন্সিল একটা দিশা দিতে পারে। আইন পেশার মুরব্বিরা একটা কার্যকর বার কাউন্সিলের মাধ্যমে আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণ, বিশেষ করে শৃঙ্খলা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে একটা পরিকল্পনা করে এগোতে পারে। এ কাজ বিশ্বস্ততার সঙ্গে করতে না পারলে বা দেরি করে ফেললে বিচার বিভাগের জন্য সেটা সুখকর হবে না।

গওহার নঈম ওয়ারা

লেখক গবেষক

nayeem5508@gmail.com