চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ২ নভেম্বর

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতু এলাকা পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ১৬ অক্টোবর
ছবি: জুয়েল শীল

আগামী ২ নভেম্বর নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ওই দিন চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ট্রেন কক্সবাজার যাবে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই রেললাইনের উদ্বোধন করবেন ১২ নভেম্বর।

আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতু এলাকায় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী এ সময় জানান, ২ নভেম্বরের আগে কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়ে যাবে। আর ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর থেকে রেললাইনে পাথর দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। এই পাথর আনা হয়েছে সিলেট থেকে। এর মধ্যে পটিয়া স্টেশন থেকে কাঞ্চননগর এবং বেঙ্গুরা পর্যন্ত প্রতিদিন লাইনে পুরোদমে পাথর বিছানোর কাজ চলছে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে মোট প্রকল্পের কাজ ৯২ শতাংশ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালানোর জন্য তার আগেই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এ রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটননগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই রেললাইন চলে গেছে। কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে রেলপথটিতে। ৬টি স্টেশনের কাজ অক্টোবরে শেষ হবে। বাকিগুলোর কাজ ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে।

নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন। ১৬ অক্টোবর

এদিকে ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলত। তবে জীর্ণ হয়ে পড়ায় ট্রেনের গতিবেগ ছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। সংস্কার করা হলে ট্রেনের গতি পাঁচ থেকে ছয় গুণ বাড়বে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় কালুরঘাট রেলসেতু। এর আগে দুবার সংস্কার করা হয়েছিল। সংস্কারকাজ শুরুর আগে ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ এই সেতুতে ট্রেনের গতি ছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। এই গতিতে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল সম্ভব নয়।

আবার ট্রেনের ভারী ইঞ্জিন বহন করাও সম্ভব নয় জরাজীর্ণ সেতুর পক্ষে। এ জন্য সেতুর গতি বাড়াতে এবং মজবুত করতে বড় ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। সংস্কারের পর গতি ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার হবে। সংস্কারকাজের জন্য গত জুনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের সঙ্গে ৪৩ কোটি টাকার চুক্তি করা হয়।