১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর কৃতকর্মের জন্য দেশটি ক্ষমা চাইলে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাটা সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে মঙ্গলবার তৌহিদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সদ্য সমাপ্ত নিউইয়র্ক সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তী সরকার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা ও সম্পদের হিস্যা সম্পর্কিত অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে সরিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্ন করা হয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে। এ সময় ড. ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি (নিউইয়র্কে বৈঠক) একদম সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সৌজন্য সাক্ষাতে আমরা কঠিন বিষয় তুলি না। যখন আলোচনার টেবিলে বসব, তখন আমরা তুলব। তবে আমরা তাদের এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করিনি যে ’৭১-কে বাদ দিয়ে আমরা ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করব।’ তিনি বলেন, ‘ভালো সম্পর্ক আমরা রাখার চেষ্টা করব, তবে ’৭১-ও থাকবে। ৫২ বছর ধরে যে বিষয়টি আছে, সেটি কালই সমাধান হবে, এটি আমি মনে করি না। কিন্তু আমরা যখন আলোচনার টেবিলে বসব, তখন এটি থাকতে হবে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, পাকিস্তানের কোনো সরকার যদি এই সাহসটা দেখায়; আসলে এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছিল, সেটাকে উদ্ধৃত করে যদি বলে যে তারা আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। এতে কিন্তু দোষের কিছু নেই। আমি মনে করি, এটুকু সাহস যদি তারা দেখাতে পারে, সম্পর্ক স্বাভাবিক করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যে এ কারণে সম্পর্ক একদম আটকে রাখা; সেটারও প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছি। হঠাৎ করে কিছুটা ইচ্ছাকৃতভাবে...অনেকটা আমাদেরও স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়—এমন ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছিল। যেখানে স্বার্থ আছে, সেখানে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত, এটিকে পাশে রেখে। আমাদের যেখানে স্বার্থ আছে, সেখানে আমরা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাব।’