জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয় সামলে বেশির ভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি বলেছেন, মূল সংকট কেটে গেছে।
মঙ্গলবার বেলা ২টার পরপর জাতীয় গ্রিডের পূর্বাঞ্চলে (যমুনা নদীর এপার) বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে একযোগে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
ফেসবুক পোস্টে নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে রাত ৯টার মধ্যে গ্রিড রিস্টোর করা সম্ভব হয়েছে। এখনো অল্প কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ আসেনি বা স্বল্প সময়ের জন্য এসেছিল—সেসব এলাকার গ্রাহকেরা আরেকটু ধৈর্য ধরুন। ধীরে ধীরে লোড বৃদ্ধি করা হচ্ছে।’
নসরুল হামিদ জানান, মঙ্গলবার বেলা ২টা ৪ মিনিটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। এরপর ২টা ৩৬ মিনিটে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন চালু করা হয়। এর মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। রাত ৯টায় সিস্টেম জেনারেশন ৮ হাজার ৪৩১ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। সতর্কতার সঙ্গে তা বাড়িয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ চলে।
ঘোড়াশাল, আশুগঞ্জ, মেঘনাঘাট, হরিপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের মতো বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো চালু করে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয় বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, ঢাকায় ২ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ১ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল।
গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে আপনারা ধৈর্য ধরেছেন, গুজবে কান দেননি, আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ ধন্যবাদ বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর প্রধান, প্রকৌশলী এবং কর্মীদের, যাঁরা বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।’
এই বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দেশের একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। ছয় সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীকে।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ ও তৃতীয় পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন।