মেট্রোরেলের পুরোনো একক যাত্রার টিকিট ও নতুন পুরোনো একক যাত্রার টিকিট
মেট্রোরেলের পুরোনো একক যাত্রার টিকিট ও নতুন পুরোনো একক যাত্রার টিকিট

মেট্রোরেলের টিকিটের নকশা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে: ডিএমটিসিএল

মেট্রোরেলের একক যাত্রার টিকিটের কার্ড থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি বাদ দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিডেট (ডিএমটিসিএল)। পুরোনো নকশার কার্ডের জায়গায় সম্প্রতি তারা নতুন কার্ড তৈরি করে। নতুন কার্ডে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি নেই, আছে মেট্রোট্রেনের প্রতীকী ছবি।

বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল আজ রোববার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। ব্যাখ্যায় দেখা যায়, নতুন টিকিটের নকশা গত ২৮ জুলাই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঠিকাদারকে জানানো হয়েছিল। এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গত সরকারের আমলে শুরু হয়, ডিজাইন চূড়ান্ত হয় এবং সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়।

নিজেদের স্বীকৃত ফেসবুক পাতায় দেওয়া ব্যাখ্যায় ডিএমটিসিএল বলেছে, তারা মোট ৩ লাখ ১৩ হাজার একক যাত্রার টিকিট এবং ৮ লাখ ২৫ হাজার ৫০০টি এমআরটি (ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট) পাস সরবরাহ করা হয়েছিল। একক যাত্রার টিকিট ও এমআরটি পাসের নকশা একই রকম হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

এমআরটি পাসধারী যাত্রীরা বেরিয়ে যাওয়ার সময় কার্ড ছুঁইয়ে (টাচ) বের হন। একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রীদের জমা দিয়ে বের হতে হয়। ডিএমটিসিএল বলছে, দুই রকম কার্ডের নকশা একই রকম হওয়ায় একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রী এমআরটি পাসধারী যাত্রীকে অনুসরণ করেন। তারা কার্ড যন্ত্রে প্রবেশ না করিয়ে টাচ করান। ফলে ‘এক্সিট গেটে’ অ্যালার্ম বেজে ওঠে এবং সাময়িক সময়ের জন্য অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

ইতিমধ্যে দুই লাখের বেশি একক যাত্রার টিকিট হারিয়ে গেছে উল্লেখ করে ডিএমটিসিএল বলেছে, একক যাত্রার টিকিটধারী যাত্রী টিকিটটি জমা না দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নকশা একই রকম হওয়ায় কর্তব্যরত ব্যক্তিদের বিভ্রান্ত হতে হয়।

একক যাত্রার টিকিট ও এমআরটি পাসের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য ৫০ হাজার টিকিটের রং আগেই পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও সুফল পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেছে ডিএমটিসিএল। তারা বলছে, একক যাত্রার টিকিটের পরিমাণ কমে যাওয়ায় নতুন টিকিট সংগ্রহ ও নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। গত ১ জানুয়ারি চার লাখ টিকিট সংগ্রহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়। গত ২৮ জুলাই একক যাত্রার টিকিটের নতুন নকশা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ নভেম্বর ২০ হাজার নতুন নকশার একক যাত্রার টিকিট সরবরাহ করে।

ডিএমটিসিএলের ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, মূলত যাত্রীদের সুবিধার জন্য একক যাত্রার টিকিট ও এমআরটি পাসধারী যাত্রীদের মধ্যকার বিভ্রান্তি দূর করা এবং সুষ্ঠু যাত্রী ব্যবস্থাপনার জন্য একক যাত্রার টিকিটে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া গত সরকারের আমলে শুরু হয়, ডিজাইন চূড়ান্ত হয় এবং সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে পাওয়া একক যাত্রার টিকিট যাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে।

ডিএমটিসিএল বলছে, তারা আশা করে একক যাত্রার টিকিটের নকশাসংক্রান্ত উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো বিভ্রান্তির অবসান হবে।