প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রুজ। ঢাকা, ১৪ অক্টোবর
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রুজ। ঢাকা, ১৪ অক্টোবর

রাখাইনে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইনে বাস্তুচ্যুতদের জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সহায়তা করার উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি রাখাইনের বিদ্যমান সংকট সমাধানে একটি ভালো সূচনা হতে পারে এবং বাংলাদেশে হাজার হাজার নতুন শরণার্থীর প্রবেশ ঠেকাতে পারবে।

মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রুজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে ড. ইউনূস এ আহ্বান জানান। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার থমাস অ্যান্ড্রুজ রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘে উপস্থাপিত তিন দফা প্রস্তাবের প্রশংসা করেন।

থমাস অ্যান্ড্রুজ বলেন, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাসহ বাস্তুচ্যুত ও অনাহারী মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।

জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার জানান, মিয়ানমারের অন্তত ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যার মধ্যে রাখাইন রাজ্যে কয়েক লাখ রয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এখানে দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তবে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরগুলোতে ইতিমধ্যে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বসবাস করছে।

অধ্যাপক ইউনূস রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। তিনি হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন ত্বরান্বিত করতে বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারের সহায়তা চান।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্ত এবং বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন সংঘটিত গণ–অভ্যুত্থানের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।