কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেছে ছাত্রলীগ। বিকেল চারটার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে যোগ দেওয়া বেশির ভাগের হাতেই লাঠিসোঁটা, অনেকেরই মাথায় আছে হেলমেট৷ তাঁদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ শাখাসহ বাইরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মী৷
ছাত্রলীগ আজকের কর্মসূচিকে বলছে, ‘বাঙালির মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ, একাত্তরের ঘৃণিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের প্রতি সাফাই, আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতা-কর্মীদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ।’
এদিকে সমাবেশ শুরুর আগে বেলা আড়াইটা থেকে টিএসসি এলাকায় কাঠ, বাঁশ, লাঠিসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছাত্রলীগের এই নেতা-কর্মীরা মহড়া দেন৷ এমন পরিস্থিতিতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে টিএসসি এলাকায় এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. আবদুল মুহিত৷ তখন তিনি সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়েন৷
আবদুল মুহিত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁরা বহিরাগত ব্যক্তিদের ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন৷ এ জন্য তাঁরা মাইকিংও করবেন।পরিবেশ ঠিক রাখতে সবার সহযোগিতা চান তিনি। এর ১০ মিনিট পর প্রক্টর মাকসুদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে এসে বহিরাগত ব্যক্তিদের চলে যেতে মাইকিং শুরু করেন। তবে এ ডাকে কেউই সাড়া দেননি।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। গতকাল বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
হামলা ও সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সংগঠনটির ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল হকিস্টিক, লাঠি, রড, জিআই পাইপসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা যায় অন্তত পাঁচজন অস্ত্রধারীকে। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ২৯৭ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।