লিফট কিনতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদলটির তুরস্ক সফর স্থগিত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। তাঁদের এ সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ছিল।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের উপপরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশক্রমে এ সফর স্থগিত করা হয়েছে বলে উপাচার্য তাঁকে জানিয়েছেন।সফরের জন্য প্রতিনিধিদলের ওই ছয়জনের ছুটি মঞ্জুর হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গত ৯ মে এ সফরের নির্ধারিত দিন ছিল। পরে ভ্রমণ পিছিয়ে এ মাসের ৬ তারিখ ঠিক করা হয়। ওই প্রতিনিধিদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খান ছিলেন। লিফট কিনতে প্রতিনিধিদলটির ১০ দিন তুরস্কে থাকার কথা ছিল।
লিফট কেনার কারণ দেখিয়ে তুরস্ক ভ্রমণের এমন আয়োজনের সমালোচনা করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলছেন, এ ধরনের ছোটখাটো কারণে বিদেশভ্রমণ বিলাসিতা এবং জনগণের অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
পাবনা নাগরিক কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য অঞ্জন চৌধুরী বলেন, উন্নতমানের লিফট যাঁরা বিক্রি করেন তাঁদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে আছেন। তাই লিফট কিনতে বিদেশ যাবার যুক্তি নেই। এই অর্থ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা যেত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময়ে এই ধরনের ভ্রমণ বিলাসিতা ছাড়া কিছু নয় এবং অর্থের অপচয় বলে সমালোচনা করেন পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এ বি এম ফজলুর রহমান। দেশেই এখন লিফট সরবরাহের জন্য বড় বড় প্রতিষ্ঠান হয়েছে। ইন্টারনেটের সুবাদে দেশ-বিদেশের লিফট দেখা যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনের লিফট কেনার জন্য শিক্ষকদের বিদেশভ্রমণ মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় বলে সমালোচনা করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের পাবনা জেলা কমিটির সভাপতি আবদুল মতীন খান। ঠিকাদারের খরচে গেলেও তিনি এটাকে অপচয় বলে মনে করেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, প্রকল্পটি চার বছর আগের। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই, আবার সরকারের সংশ্লিষ্টতাও নেই।
প্রতিনিধিদলটির দলনেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এস এম মোস্তফা কামাল খান। উপদলনেতা কোষাধ্যক্ষ কে এম সালাহ উদ্দিন। সদস্যসচিব হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক জি এম আজিজুর রহমান। বাকি তিনজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ, উপপ্রকৌশলী মো. রিপন আলী ও জহির মোহাম্মদ জিয়াউল আবেদীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পাসে একাডেমিক-আবাসিক হলসহ পাঁচটি ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ভবনগুলোর জন্য ২৫টি লিফট প্রয়োজন। আর এই লিফট কেনার জন্য এ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে।