চট্টগ্রামে আড়াই শ গ্রাম গরুর মাংস বিক্রি শুরু

ক্রেতাদের সুবিধার্থে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম গরুর মাংস বিক্রি শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। চকবাজার, ৪ মার্চ।
ছবি: সৌরভ দাশ

‘নিম্ন আয়ের মানুষেরা এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারেন না। দাম শুনেই হেঁটে চলে যান। এখন তাঁরা চাইলেই গরুর ২৫০ গ্রাম মাংস কিনে খেতে পারবেন।’ কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার গরুর মাংস বিক্রেতা ইলিয়াস সওদাগর।

আজ শনিবার সকাল থেকে চকবাজারে তাঁর দোকানসহ পাশের আরও একটি দোকানে শুরু হয়েছে ২৫০ গ্রাম করে গরুর মাংস বিক্রি। একজন ক্রেতা চাইলেই সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম গরুর মাংস নিতে পারবেন। দোকানে এসে বললেই ক্রেতাকে ২৫০ গ্রাম মাংস মেপে দেবেন বিক্রেতারা। চাইলে আধা কেজি মাংসও নেওয়া যাবে।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, হাড়সহ গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর হাড়ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮২০ থেকে ৮৫০ টাকায়। সেই হিসাবে হাড়সহ ২৫০ গ্রাম গরুর মাংসের দাম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। হাড়ছাড়া গরুর মাংস ২০৫ থেকে ২১২ টাকায় কেনা যাবে।

‘নিম্ন আয়ের মানুষেরা এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারেন না। দাম শুনেই হেঁটে চলে যান। এখন তাঁরা চাইলেই গরুর ২৫০ গ্রাম মাংস কিনে খেতে পারবেন।’
কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার গরুর মাংস বিক্রেতা ইলিয়াস সওদাগর।

বাজার করতে আসা মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘প্রায়ই নিম্ন আয়ের মানুষদের মাংস কিনতে এসে ফিরে যেতে দেখেছি। তাঁদের জন্য এখন সুবিধা হবে। যাঁদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা কম, তাঁরাও চাইলে এখন অল্প পরিমাণে কিনে খেতে পারবেন।’

এর আগে একই বাজারে সেলিম পোলট্রি শপে টুকরো করে মুরগির মাংস বিক্রি শুরু হয়েছে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেলিম পোলট্রি শপের পাশাপাশি আরও দুটি দোকানে আজ চালু হয়েছে টুকরো করে মুরগির মাংস বিক্রি। সেগুলোর মধ্যে একটি আলমগীর পোলট্রি সেলস সেন্টার। দোকানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যাঁরা টুকরো হিসেবে নিতে চান, এখন থেকে নিতে পারবেন।

সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম গরুর মাংস বিক্রির ঘোষণাপত্র টাঙানো হয়েছে দোকানে। চকবাজার, ৪ মার্চ।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবমতে, জানুয়ারি মাসের তুলনায় ব্রয়লার মুরগিতে দাম বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। চট্টগ্রামের বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩৩০ ও দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজনপ্রতি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।

টুকরা হিসেবে মুরগি ও গ্রাম হিসেবে গরুর মাংস বিক্রয়ের উদ্যোগটি নিয়েছেন চকবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা মো. কায়সার আলী চৌধুরী। তিনি বলেন, টুকরা হিসেবে মুরগির মাংস বিক্রির পর আজ থেকে গরুর মাংসও ২৫০ গ্রাম করে পাওয়া যাবে। দোকানিদের সঙ্গে আলাপ করে প্রাথমিকভাবে দুটি দোকানে বিক্রি শুরু হয়েছে। তাঁদের দেখাদেখি আরও দোকান রাজি হবে।

এর আগে মুরগির মাংসও টুকরা করে বিক্রি শুরু হয়।

এখনো মানুষ বলতে সংকোচ করে জানিয়ে মো. কায়সার আলী চৌধুরী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে টুকরা হিসেবে মাছ-মাংস বিক্রি হয় অনেক আগে থেকেই। উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলেও একইভাবে বিক্রি হয়। তবে এখানে এখনো এর প্রচার নেই। অনেকে বলতে লজ্জা পান। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সরাসরি বলতে পারেন না। সব দোকানে এবং অন্যান্য বাজারে চালু হয়ে গেলে মানুষ কিনতে আসবে বলে মনে করেন তিনি। ভবিষ্যতে মাছের বাজারেও টুকরা হিসেবে বিক্রি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে।

মাছবাজারে আকারভেদে তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২৪০, কাতলা ২৩০ থেকে ৩০০ ও রুই ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১২ টাকায়। দেশি মসুর ডাল ১৩৫ থেকে ১৪০, মোটা দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০, মানভেদে ছোলা ৮২ থেকে ৯৫, বোতলজাত সয়াবিন (১ লিটার) ১৮০ থেকে ১৯০, পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০, আকারভেদে রসুন ১১০ থেকে ১৪০, প্যাকেটজাত আটা ৬৫ থেকে ৬৮ ও প্যাকেটজাত ময়দা ৭২ থেকে ৭৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।