বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বজন ও আহতদের সহায়তার জন্য গঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে চেকটি গ্রহণ করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্বজন ও আহতদের সহায়তার জন্য গঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে চেকটি গ্রহণ করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান

‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদান

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণ ও শহীদ পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য গঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’–এ ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের এককালীন ও মাসিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া আলাদাভাবে ক্ষতি অনুযায়ী জরুরি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফাউন্ডেশনের দপ্তর সম্পাদক ও অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এ সময় ফাউন্ডেশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান ওরফে স্নিগ্ধ (ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত মুগ্ধর বড় ভাই)।

এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফাউন্ডেশন গঠনের কথা জানানো হয়। ফাউন্ডেশনের সভাপতি করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন শহীদ মুগ্ধর বড় ভাই মীর মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ কাজী ওয়াকার আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য হিসেবে আছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। এ ছাড়া আরও ১৪ জন সাধারণ সদস্যসহ মোট ২১ সদস্যের এই ফাউন্ডেশন হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারকে দেখাশোনার যে দায়িত্ব সরকার নিয়েছে, তা এই ফাউন্ডেশন থেকে পরিচালিত হবে। একই সঙ্গে আহত ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসহ অন্যান্য সহযোগিতা নিশ্চিত করবে এই ফাউন্ডেশন।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, জরুরি আর্থিক সহায়তা অবিলম্বে শুরু করা হবে। সেটিরই প্রথম উদ্যোগ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকার তহবিল ফাউন্ডেশনে অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি স্বাধীন ফাউন্ডেশন। এখানে যে কেউ অনুদান দিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে ও দেশের বাইরে সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি এই ফাউন্ডেশনে সহায়তা করার জন্য। যাতে আমাদের যে উদ্যোগ, তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি।’

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে অনুদানের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করা হলো। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে বন্যার্তদের জন্য যে সহায়তা আসছে, সেটি কিন্তু এটি (ফাউন্ডেশনে অনুদান) থেকে আলাদা। প্রধান উপদেষ্টা চাইলে যেকোনো খাতে অনুদান দিতে পারেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় ৮০০ জন শহীদ হয়েছেন এবং ২০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। এখন পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এই যোগাযোগের কাজটি শেষ হলে স্মরণসভা করা হবে।

কত টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আগামীকাল ফাউন্ডেশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, আজকেই প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে অনুদানের চেক গ্রহণ করা হয়েছে।