ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফীকে (সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় এক শিশুকে অপহরণ মামলায় বর্তমানে রিমান্ডে আছেন।
৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে আবদুল্লাহিল কাফীকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে আজ সোমবার বিষয়টি জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী (সুপারনিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হাজারীবাগ থানায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাই ৩ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালে তিনি বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন। বিধি অনুযায়ী খোরপোশ প্রাপ্য হবেন।
২ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহিল কাফীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় তাঁর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তখন ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এরপর গত বুধবার আবদুল্লাহিল কাফীকে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকায় শিশু আলিফ অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁর রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাঁর আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মাথায় পুলিশের হেলমেট ও সাদাপোশাকের ওপর পুলিশের ভেস্ট পরা এক ব্যক্তি আরেকজনের সহায়তায় চ্যাংদোলা করে নিথর এক যুবকের দুই হাত ধরে ভ্যানের ওপর তুলছেন। ভ্যানের ওপর আরও কয়েকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখা। দেহগুলো থেকে ঝরে পড়া রক্তে ভিজে গেছে সড়কের কিছু অংশ। বিছানার চাদরের মতো একটি চাদর দিয়ে তাঁদের ঢেকে রাখা হয়েছে। পাশেই পুলিশের হেলমেট, ভেস্ট পরা আরও কয়েকজনকে দেখা যায়। ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটি সাভারের আশুলিয়া থানা-সংলগ্ন এলাকার বলে দাবি করেছেন অনেকে। এএফপির ফ্যাক্ট চেকিং এডিটর কদরুদ্দীন শিশির তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে ঘটনাটি ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার নিকটবর্তী এলাকায় বলে উল্লেখ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচার গুলি চালালে বেশ কয়েকজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। রাতে আশুলিয়া থানার অদূরে নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী মহাসড়কের এক পাশে পুলিশ লেখা পিকআপের আগুনে ভস্মীভূত অন্তত দুটি মরদেহ দেখেন তাঁরা। এ ছাড়া থানার সামনে আগুনে পোড়া একটি মরদেহ ছিল। পদচারী-সেতুতে উল্টো করে ঝোলানো ছিল পুলিশের দুই সদস্যের ক্ষতবিক্ষত লাশ। তখন স্থানীয় লোকজন আগুনে ভস্মীভূত একাধিক লাশ পিকআপে থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন। ওই রাতে আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।