এবার মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিল দুদক

মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস
ফাইল ছবি

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তাঁর স্ত্রীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার পর এবার বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে এক মামলায় অভিযোগপত্র দিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই দম্পতির বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় এই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মোহা. নুরুল হুদা আজ মঙ্গলবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিকেলে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসের নামে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আফরোজা আব্বাসের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৮ টাকার যে সম্পদ দেখানো হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে এ সম্পদ তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় অর্জন করেছেন। আফরোজা আব্বাস একজন গৃহিণী, সে হিসাবে ওই সম্পদ অবৈধ উৎসের আয় থেকে অর্জিত বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

মির্জা আব্বাস ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সংসদ সদস্য, মেয়র ও মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট পর্যন্ত আফরোজা আব্বাসের নামে ওই পরিমাণ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।

২০১৯ সালের ৭ জুলাই দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন রাজধানীর শাহজাহানপুর (ডিএমপি) থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। দুদকের দাবি, তদন্তে অবৈধ সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করার কৌশল অবলম্বন করার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। দু’জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারা, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় এবং সেই সঙ্গে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৮; মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ৪ ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদকের সচিব বলেন, এখানে পলিটিক্যাল কোনো যোগসূত্র নেই। দুদক তার নিজস্ব আইন-বিধি মেনে তদন্তকাজ পরিচালনা করে থাকে।

মির্জা আব্বাস বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। আফরোজা আব্বাস বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি। মির্জা আব্বাস বর্তমানে কারাগারে। ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে পুলিশ মির্জা আব্বাসকে তাঁর শাহজাহানপুরের বাসা থেকে আটক করে। ওই রাতেই রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আটক করা হয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও। দুজনকেই পরে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গতকাল সোমবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানীতে নকশাবহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণের অভিযোগে এই মামলা করা হয়।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার বিএনপির কাছে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে এখন এই পথে হাঁটছে।