প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে আরও বিদেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করতে শ্রম খাতে ব্যাপক সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শ্রম খাতের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল আজ সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যায়। সেখানে বৈঠকে ড. ইউনূস এ কথা বলেন।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মার্কিন শ্রম বিভাগের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া মেই লি ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি ফে রড্রিগেজ।
অধ্যাপক ইউনূস প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘আমরা আমাদের শ্রম আইনকে বৈশ্বিক মানদণ্ডের সমমানসম্পন্ন করতে চাই। এটা আমার অঙ্গীকার।’ তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কেবল দেশের শ্রম আইন সংস্কার করতে এবং এ বিষয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ নিরসনের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করেছে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক শ্রম অধিকার গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশ থেকে পোশাক ও জুতা ক্রয়কারী শীর্ষ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো শ্রম আইন সংস্কার ও বাংলাদেশের কারখানায় শ্রমিকবান্ধব পরিস্থিতি তৈরিতে অধ্যাপক ইউনূসের পদক্ষেপকে সমর্থন করে।
সরকার ও স্থানীয় ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১৮ দফা চুক্তিসহ পদক্ষেপগুলোর কথা উল্লেখ করে কেলি ফে রড্রিগেজ বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত সাড়ে তিন মাসে শ্রম খাতের জন্য যা করেছেন, ‘সেগুলো সবই তার বিস্ময়কর সাক্ষ্য’।
মার্কিন কর্মকর্তারা মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে লাখো পোশাক ও পাদুকাশ্রমিককে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কারখানায় ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা ও প্রতিবছর মজুরি পর্যালোচনার আহ্বান জানান।
পোশাক কারখানায় ন্যূনতম মজুরির সুবিধাদান প্রসঙ্গে থিয়া মে লি বলেন, ‘এটি ব্যবসার জন্য ভালো ও অর্থনীতির জন্যও ভালো।’ তিনি বলেন, কর্মী ইউনিয়ন হল ‘গণতন্ত্রের প্রশিক্ষণক্ষেত্র’।
আজকের বৈঠকে তিনটি শীর্ষ মার্কিন ব্র্যান্ড পিভিএইচ, ক্যালভিন ক্লেইন ও গ্যাপ ইনকরপোরেটেডের সিনিয়র কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
পিভিএইচ করপোরেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল ব্রাইড বলেছেন, তাঁরা বাংলাদেশে শ্রম খাতে সংস্কারকে সমর্থন করেছেন। তাঁরা কম্বোডিয়ায় অনুরূপ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস ব্র্যান্ডগুলোকে প্রতি জানুয়ারিতে তাদের আদেশের মূল্যবৃদ্ধি ঘোষণা করার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের নির্মাতারা সে অনুযায়ী শ্রমিকের মজুরি বাড়াতে পারে।
বৈঠকে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোল্ডেবও ছিলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অধ্যাপক ইউনূসের ব্যাপক শ্রম সংস্কারকে পূর্ণ সমর্থন করে। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার সঙ্গে অংশীদার হতে চাই।’