বিদ্যুৎ–সংকট মোকাবিলায় দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লোডশেডিং হতে পারে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। আর এখন থেকে সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে পেট্রলপাম্প। খরচ সাশ্রয়ের জন্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার। আজ সোমবার এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক–ই–এলাহী চৌধুরী।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে আজ সকালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংসহ নানা সিদ্ধান্তের কথা জানান উপদেষ্টা।
তৌফিক–ই–এলাহী চৌধুরী বলেন, খরচ কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আজ থেকে সাময়িক বন্ধ থাকবে। এ সিদ্ধান্ত সাময়িক। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসা হবে।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘পৃথিবীতে একটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের যে যুদ্ধ, সে যুদ্ধ কিন্তু আমাদেরও যুদ্ধ। ওই যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে আমাদের ওপর।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের অর্থের অভাব নেই, তারাও কিন্তু লোডশেডিং করছে। যুক্তরাজ্যে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় হচ্ছে। উৎপাদনকে কমিয়ে খরচ যাতে সহনশীল হয়, সে পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ডিজেলের বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত স্থগিত করলাম, তাতে অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। মনে রাখতে হবে, ডিজেলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে।’
তৌফিক–ই–এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ধারণা, এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। এতে দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা এবং কোনো কোনো জায়গায় দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং হতে পারে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং পৃথিবীর এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সাংবাদিকদের সামনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘কোন এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হবে, তা আগে থেকে গ্রাহককে জানিয়ে দেওয়া হবে। আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি শিল্প খাতকে।’ তিনি আরও বলেন, আগামী এক সপ্তাহে এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হবে। পরে পরিস্থিতি বুঝে ভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে এক দিন পেট্রলপাম্প বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে বন্ধ রাখা হবে, সেটা পরে জানানো হবে।
বন্দর এলাকায় সপ্তাহে দুই দিন পেট্রলপাম্প বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে বলেও জানান নসরুল হামিদ।
সভায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারি–বেসরকারি অফিস ভার্চ্যুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি অফিসগুলোয় কীভাবে সময় কমিয়ে আনা যায়, সেটাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
বৈঠকে জানানো হয়, সরকারি অফিসগুলো ভার্চ্যুয়ালি পরিচালনার বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করবে।