যে টেলিভিশন যত বেশি প্রযুক্তি-সুবিধাসমৃদ্ধ, ক্রেতাদের কাছে সেই টেলিভিশনের তত চাহিদা। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া দর্শকদের টেলিভিশন দেখার ধারণা ও অভিজ্ঞতা বদলে দিচ্ছে। বাজার ঘুরে ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তির টেলিভিশনের চাহিদা বেশি। তাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও আধুনিক প্রযুক্তি-সুবিধাসহ টেলিভিশন বাজারজাত করছে।
তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতিতে জীবন হয়েছে সহজ। ব্যস্ততম সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিদিনের যাপিত জীবনেও এসেছে পরিবর্তন। বদলেছে বিনোদন উপভোগের ধরন। ঘরের প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের তালিকায় এখন প্রথম দিকেই রয়েছে টেলিভিশন। আর সেই টেলিভিশন যদি হয় সবচেয়ে আধুনিক, তাহলে আপনার টেলিভিশন দেখার ধারণাই বদলে যাবে।
সবাই মিলে একসঙ্গে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দেয় টেলিভিশন। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষটিও অবসর সময়ে বিনোদনের খোরাক মেটাতে পারেন। এতে দৃঢ় হয় পারিবারিক বন্ধন। তাই সর্বোচ্চ মানের শব্দ ও ছবির কোয়ালিটির টেলিভিশন কেনা উচিত।
ভিশন ইলেকট্রনিকসের হেড অব মার্কেটিং শেখ মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ভিশন ব্র্যান্ডের টেলিভিশনে রয়েছে সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়। উন্নত বিশ্বের টেলিভিশনে যে প্রযুক্তি, আমরাও সেই প্রযুক্তিই ব্যবহার করেছি। সারা বিশ্বেই টেলিভিশনে তিনটি অপারেটিং সিস্টেম—লিনাক্স, অ্যান্ড্রয়েড ও গুগল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। ভিশনের টেলিভিশনে এর সব কটিই রয়েছে। এ ছাড়া ভিশন টিভি তৈরি করা হয়েছে আধুনিক সব প্যানেল দিয়ে, যেগুলো বিশ্ববাজারে সমাদৃত। আমাদের যে টেলিভিশনে যেসব প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশের মধ্যে আমরাই প্রথম ব্যবহার করেছি।’
দেশে উৎপাদিত ও বিক্রি হওয়া প্রায় সব টেলিভিশন ব্র্যান্ড আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা রাখার চেষ্টা করছে। অনেক টেলিভিশনে এখন আমেরিকার বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ডলবি ল্যাবরেটরিজের শব্দ বা অডিওর বিভিন্ন প্রযুক্তি-সুবিধাযুক্ত করা হচ্ছে। ফলে ডলবি প্রযুক্তির মাধ্যমে অডিওর নয়েজ কমানো ও গুণগত মান বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। সাউন্ড সিস্টেমের জগতে বিশ্বজুড়ে ডলবি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু লাইসেন্সধারী উৎপাদনকারীরাই তাদের প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমতি পায়।
স্মার্ট টেলিভিশনের মাদারবোর্ডে সংযোজন করা হয় বিল্ট-ইন ই-শেয়ার প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ফোনে ডিসপ্লের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে টিভির ডিসপ্লে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য গ্রাহকের স্মার্টফোনটিতেও ই-শেয়ার অ্যাপসটি ইনস্টল করতে হবে। এতে করে গ্রাহকের ফোনে রক্ষিত ইমেজ, অডিও, ভিডিও প্রদর্শিত হবে টিভির পর্দায়। পাশাপাশি, টিভিতে সংরক্ষিত রোমাঞ্চকর ও মজার সব গেমস খেলা যাবে মোবাইল থেকে। আবার টিভির ডিসপ্লে মোবাইল ফোনের ডিসপ্লেতে শেয়ার করে, টাচের মাধ্যমে টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্মার্ট টেলিভিশনে প্রযুক্তির নানা সুবিধা ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গুগল টিভি, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, ওয়েবওএস টিভি, টাইজেন ওএস টিভি ও কুলিটা ওএস টিভির সুবিধা। অ্যান্ড্রয়েড-৯ ও ১১ সাপোর্ট করে এসব স্মার্ট টিভি।
বাড়তি বিদ্যুৎ বিল বা বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে সমস্যা হয় কি না—স্মার্ট টিভি নিয়ে অনেকেই এমন দুর্ভাবনায় থাকেন। স্বস্তির কথা হলো, অন্য টিভির চেয়ে স্মার্ট টিভিতে গড়ে ৩৫ ভাগ কম বিদ্যুৎ খরচ হয়। অনেক সময় দেখা যায়, বজ্রপাত হলে টিভি নষ্ট হয়ে যায়। তবে আধুনিক প্রযুক্তি-সুবিধাসম্পন্ন টিভির ক্ষেত্রে এসব আশঙ্কা থাকে না। স্মার্ট টিভি ১৫ হাজার ওয়াট পর্যন্ত নিজেকে সুরক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, ভোল্টেজ আপ-ডাউন ইত্যাদিতে স্মার্ট টিভির ক্ষতি হয় না।