চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানো ও আবাসন–সংকট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা–কর্মীরা। সমাবেশে নেতা–কর্মীরা ৭ সেপ্টেম্বরের শাটল ট্রেনের ছাদের দুর্ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি প্রত্যয় নাফাকের সভাপতিত্বে ও শাখা পিসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক অন্বেষ চাকমার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন পিসিপির সভাপতি নরেশ চাকমা, ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক সুদীপ্ত চাকমা, দপ্তর সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন আহমদ ও সদস্য সোহেল রানা।
নরেশ চাকমা বলেন, শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবি শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু প্রশাসন আমলে নেয়নি। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন–সংকট, চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকার কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।
প্রত্যয় নাফাক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যাতায়াতব্যবস্থায় দুর্ভোগ সীমাহীন। এর ফল আমরা ৭ সেপ্টেম্বর দেখেছি। এ ছাড়া ছয় বছর ধরে আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ বন্ধ। সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে যোগ দেওয়ার শর্তে শিক্ষার্থীদের হলে উঠতে হচ্ছে। এরপর বাধ্য হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন। দ্রুত শিক্ষার্থীদের আবাসনব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। যোগ্যতা ও যৌক্তিক প্রয়োজনের ভিত্তিতে যেন শিক্ষার্থীরা আসন পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’
৭ সেপ্টেম্বর রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে যাওয়ার সময় হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৬ শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের একজন শিক্ষার্থী এখনো চিকিৎসাধীন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেদিন দিবাগত রাত ১২টার দিকে ৬৫টি যানবাহন, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব এবং পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই ভাঙচুরে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে।
এরপর গত শনিবার রাতে শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ১২ জনসহ ১৪ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও এক হাজার শিক্ষার্থীকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলার তদন্ত চলছে।