পুষ্টিক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি: সবার জন্য পুষ্টির বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা

নীলফামারী জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে এবং জানো প্রকল্পের সহযোগিতায় গত বুধবার জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নীলফামারী জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে এবং জানো প্রকল্পের সহযোগিতায় গত বুধবার জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নীলফামারী জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির (ডিএনসিসি) উদ্যোগে ও জয়েন্ট অ্যাকশন ফর নিউট্রিশন আউটকাম (জানো) প্রকল্পের সার্বিক সহযোগিতায় গত ৩০ আগস্ট জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘আইসিটি ফর নিউট্রিশন’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ওই কর্মশালায় তথ্যপ্রযুক্তির উদ্ভাবনী ব্যবহার কীভাবে একটি দেশের পুষ্টি উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়ে বিভিন্নভাবে আলোকপাত করা হয়। কেয়ার বাংলাদেশের জানো প্রকল্পটি ২০১৮ সাল থেকে পুষ্টিক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কাজ করে চলেছে এবং এ কার্যক্রমের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করাই ছিল কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য।

জানো প্রকল্পটি তার বিভিন্ন পুষ্টিভিত্তিক উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা-২–এর সঙ্গে সমন্বয় কার্যক্রমে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগী প্রকল্প হিসেবে কাজ করছে আর কার্যক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির উপস্থাপনের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে আরও ভালো সমন্বয় নিশ্চিত করতে ও আপামর জনসাধারণের পুষ্টিবিষয়ক জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। জানো প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ও অস্ট্রিয়ান ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশনের সহ-অর্থায়নে কেয়ার বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিও) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

নীলফামারী সিভিল সার্জনের পক্ষে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু মো. আলেমুল বাশারের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মশালাটির সূচনা হয়। এরপর জানো প্রকল্পের তথ্যপ্রযুক্তি–সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করা হয়। যেখানে বলা হয়, এখন পর্যন্ত রংপুর ও নীলফামারী জেলার ৪ লাখ মানুষ আইসিটিভিত্তিক তথ্যেও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি জাতীয় পুষ্টি পরিষদের তত্ত্বাবধায়নে ৪৪টি জেলায় অনলাইন বহুখাতভিত্তিক পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরপর ‘পুষ্টিক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহাররের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো হলো—

  • ইন্টারনেটের খরচ তৃণমূল স্তরের ব্যবহারকারীদের হাতের নাগালে আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ

  • স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে আইসিটি আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা

  • বিজ্ঞানমনস্ক জাতি তৈরিতে পদক্ষেপ গ্রহণও বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী মেলা বা অনুষ্ঠানের আয়োজন

  • আইসিটিতে প্রবেশাধিকার তৈরিতে সবাইকে একযোগে কাজ করা।

বিএনএনসির মহাপরিচালক কর্মশালার প্রধান অতিথি মোহাম্মদ হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, এ অনলাইনভিত্তিক পুষ্টি কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা সিস্টেমটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পরিবীক্ষণ প্রক্রিয়া জোরদার করছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভাপতি পঙ্কজ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আজকের আইসিটি কর্মশালাটি নীলফামারীর মানুষের পুষ্টিমান উন্নয়নে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মার্গেরিটা ক্যাপালবি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেয়ার বাংলাদেশের এক্সট্রিম রুরাল পোভার্টি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর আমানুর রহমান, কেয়ার বাংলাদেশের হেলথ ডিরেক্টর মো. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ডিরেক্টর আফরোজ মহল, ইএসডিওর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. শহীদুজ্জামান এবং অন্য কর্মকর্তারা।