সিদ্দিকবাজারে সকাল থেকে অপেক্ষায় স্বজনেরা

আবদুল মান্নান তাঁর মেয়ের স্বামী মেহেদি হাসানের (স্বপন) খোঁজে আজ সকালেই এসেছেন সিদ্দিকবাজারের বিধ্বস্ত ভবনটির কাছে। এ সময় স্বপনের ভাই সোহাগ এলে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন মান্নান
ছবি: জাহিদুল করিম

রাজধানীর গুলিস্তানের পাশে সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার পরদিন আজ বুধবার সকাল থেকেই কয়েক ব্যক্তি তাঁদের স্বজনের খোঁজে এসেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজে সাময়িক বিরতি টানে। আজ সকালে আবার উদ্ধারকাজ শুরু করবে তারা। এর আগে সেখানে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।

গতকাল বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সিদ্দিকবাজারের নর্থ সাউথ রোডের সাততলা ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে। বিধ্বস্ত ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উদ্ধারকাজের জন্য ভেতরে ঢুকতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ আবার শুরু হবে উদ্ধারকাজ।

আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিমর্ষ হয়ে বসে আছেন আবদুল মান্নান। তাঁর মেয়ের স্বামী মেহেদি হাসান (স্বপন) এখানে একটি দোকানে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একটু বাদে সেখানে এলেন স্বপনের ভাই সোহাগ। তাঁকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন মান্নান। সোহাগ কাল থেকে হাসপাতালে হন্যে হয়ে ভাইকে খুঁজেছেন। কিন্তু পাননি।

সকাল থকে সিদ্দিকবাজারে ফুফাতো ভাইয়ের অপেক্ষায় রাসেল

সোহাগ বলছিলেন, ‘উদ্ধারকাজ দ্রুত শুরু হওয়া দরকার। আমরা ভাইরে খুঁজে পেতে চাই।’ গতকাল রাতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ভবনের কলাম ধসে পড়ায় ভেতরে ঢোকা সম্ভব হচ্ছে না। আবার কলাম সরিয়ে ঢোকার চেষ্টা করা হলে তাতে ভবনের বাকি অংশটুকু ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে এই ঝুঁকি কমিয়ে আজ ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করা হবে।

উদ্ধারকাজ শুরুর অপেক্ষায় আছেন রাসেল নামের আরেকজন। তাঁর ফুফাতো ভাই সুমনকে খুঁজে পাচ্ছেন না। সুমনের দুয়েকজন নিকট আত্মীয়ও এখানে আছেন বলে জানান রাসেল।

সিদ্দিকবাজারের দুর্ঘটনাস্থলের কাছে এসব ব্যক্তি সকাল থেকে স্বজনদের অপেক্ষায়

বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ১৯ জন চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। অন্যদিকে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইউব হোসেন জানিয়েছেন, সেখানে আহত ১০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।