পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক করেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লি জিয়ানছাও। ঢাকা, ২৪ জুন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক করেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লি জিয়ানছাও। ঢাকা, ২৪ জুন

দুই দেশের ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশ ও চীনের ক্ষমতাসীন দুই দলের মধ্যে যোগাযোগকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লি জিয়ানছাও। তিনি বলেছেন, এই যোগাযোগ দুই দেশের জনগণের বিষয়ে বুঝতে সহায়ক হয়। যার ফলে এক দেশ অন্য দেশের ক্ষেত্রে সঠিক নীতি গ্রহণ করতে পারে।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন লি জিয়ানছাও। পরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

লি জিয়ানছাও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিস্তৃত ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুষ্ঠেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে চীন।

দুই দেশের ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করে লি জিয়ানছাও বলেন, ‘আলোচনায় দুই দেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে যোগাযোগের প্রেক্ষাপটের বিষয়ে জোর দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। আর চীনে ক্ষমতায় আছে কমিউনিস্ট পার্টি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের নীতির উৎস রাজনৈতিক দলের নিরিখে হয়ে থাকে। ফলে দুই দেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে যোগাযোগ সরকার ও জনগণের পরস্পরের সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে খুবই সহায়ক। এই যোগাযোগ পরস্পরের জন্য সঠিক নীতি গ্রহণেও ভূমিকা রাখে। এই যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ।’

সিপিসি নেতার সঙ্গে আলোচনার পর হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীন আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী এবং বড় বাণিজ্য সহযোগী। আমরা বাণিজ্য–ঘাটতি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা চীন থেকে আমদানি করি প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য। আর রপ্তানি করি ৭৫ কোটি ডলারের পণ্য। আমরা বলেছি, ওষুধ, চামড়া ও সিরামিক পণ্যগুলো তারা আমাদের কাছ থেকে নিতে পারে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮-১১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সম্ভাবনা বেশি। বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সামনে প্রধানমন্ত্রীর সফরে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে, সেটাই প্রত্যাশা।

বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চীন সফরে যাবে বলে জানান হাছান মাহমুদ।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা চেয়েছি। আমরা গাজা ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেছি। এ ব্যাপারে চীন সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছি।’

যেকোনো প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে ব্রিকসে যুক্ত করতে চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি সদস্যদেশ বা অংশীদার রাষ্ট্র যেভাবেই হোক, সেটা নিয়ে তাদের সমর্থন চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের বিনিয়োগ যেন বাংলাদেশে আরও আসে, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। চীনের মন্ত্রী আমাদের দেশে আরও বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

তিস্তা বহুমুখী প্রকল্প নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আজ আলোচনা হয়নি। উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল পরে চীন সফর করবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।