একই কারখানায় দুর্ঘটনায় দুবার আহত হলেন ফোরকান

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ভেতরে থাকা ট্রাকে আগুন ধরে যায়
ছবি: সংগৃহীত

বাড়ির কাছেই সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে একটি কারখানায় প্রায় ১৬ বছর ধরে চাকরি করেছেন মো. ফোরকান (৩৩)। গত শনিবারের বিস্ফোরণে তিনি আহত হয়েছেন। এর আগেও ওই কারখানায় তিনি একবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। সেবার তাঁর পায়ের দুটি আঙুল কাটা পড়ে।

সেবার আবার কাজে ফিরতে পারলেও এবার কাজে ফিরতে পারবেন কি না, জানেন না ফোরকান।

গত শনিবার বিকেলে কদমরসুলের সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে কারখানায় বিস্ফোরণের সময় ফোরকান সেখানে কর্মরত ছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজন মারা যান। আহত হন অন্তত ২৫ জন। এর মধ্যে ২০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হন।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীর বাসিন্দা ফোরকান চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে। তাঁর মাথা ও হাতে জখম রয়েছে। কানেও কম শুনছেন। সর্বাঙ্গে ব্যথা।

ফোরকানের সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন ভাই আইনুল হোসেন। আজ সোমবার সকালে আইনুল বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ডান পায়ের দুটি আঙুল আগেরবার দুর্ঘটনায় কেটে ফেলতে হয়েছে। ১২ বছর আগে একবার এই কারখানায় কাজ করার সময় পায়ের ওপর সিলিন্ডার পড়েছিল। সেবার অনেক দিন চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে দুর্ঘটনায় পড়ে।’

ফোরকানের এখন হাঁটতে কিছুটা সমস্যা হয়। ওই দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি একই কারখানায় কাজ করছেন। বাড়ি থেকে কারখানার দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।

ফোরকানেরা তিন ভাই। ভাটিয়ারীতে একসঙ্গে থাকেন তিনজন। ফোরকানের আট বছর বয়সী এক ছেলে ও পাঁচ বছর বয়স এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী আঁখি বেগমও দিশাহারা স্বামীর এই অবস্থায়।

আইনুল বলেন, ‘আমাদের দুই ভাইয়ের আয়ে সংসার চলে। মজুরিও পাই খুব অল্প টাকা। এখন ভাই আর কাজ করতে পারবে কি না, জানি না। কারণ, তাঁর মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে ক্ষত আছে। ভয়ও কাজ করছে একটা।’

ফোরকান কাছ থেকে দেখেছেন এমন ঘটনা। কত দিনে তাঁর মনের ভয় কাটে তাও চিন্তা করছেন পরিবারের সদস্যরা।

কর্তব্যরত এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফোরকানসহ ক্যাজুয়ালটিতে চিকিৎসাধীন কারও জীবন শঙ্কা নেই।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত প্রথম আলোকে বলেন, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অনেকে সুস্থ হওয়ার পথে। কয়েকজনের দীর্ঘ চিকিৎসা লাগবে। সবশেষ কাল রাতে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছেন।