কোটার বিরোধিতায় একাত্তরের পরাজিত গোষ্ঠীকে পুনর্বাসনের চেষ্টা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে: ডিইউজে

গত রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটা আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। গত সোমবার ডিইউজের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এ ধরনের স্লোগান দিয়ে কোটাপদ্ধতির বিরোধিতাকারীরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে একাত্তরের পরাজিত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’

সংগঠনের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বিবৃতির মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করে উল্লেখ করেছেন, কয়েক দিন ধরে চলা কোটাবিরোধী আন্দোলনে দেশের মানুষ দুর্ভোগের শিকার হলেও সন্তানসম আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মী ছিল। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি যখন একটি যৌক্তিক পরিণতির দিকে যাচ্ছিল, তখন হঠাৎ করে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে ডিইউজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, চীন সফর-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা কোটা পাবে না তো রাজাকারদের নাতি-পুতিরা কোটা পাবে?’ কথাটি বলার মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেছেন। কিন্তু তাঁর সে বক্তব্যকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচারণা ডিইউজের কাছে উদ্দেশ্যমূলক ও দুরভিসন্ধিমূলক মনে হয়েছে।

বিবৃতিতে ডিইউজে নেতারা উল্লেখ করেছেন, দেশের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সেই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাঙ্গন থেকে রাজাকারের সমর্থনে স্লোগান ওঠা পুরো জাতিকে হতাশ ও বিস্মিত করেছে। ডিইউজে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিক সমাজ মনে করে, আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে আন্দোলনকারীদের উচিত হবে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠা করা। আর বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগের উচিত হবে বিষয়টির যৌক্তিক সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে।