সারা দেশে গত ফেব্রুয়ারিতে ৫০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫৫ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ৩১ জন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত দুর্ঘটনার সংবাদের ভিত্তিতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে তারা।
সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫৪৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯৯ জন নিহত ও ১ হাজার ৯৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ১৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২১০ জন নিহত ও ১২৯ জন আহত হন।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছিল মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর তাতে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল মোট নিহতের ৩৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ ছাড়া আহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল মোট আহতের ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছিল মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর তাতে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল মোট নিহতের ৩৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ ছাড়া আহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল মোট আহতের ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ।
ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ১১৫টি। এতে ১৩৫ জন নিহত ও ৩১৭ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম হয়েছে সিলেট বিভাগে ২১টি। এতে ২২ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
একই মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও ৬৪ জন আহত হন। নৌপথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন এবং একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ গাড়িচাপা দেওয়ার, ১৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষের, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়ার ও ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বিবিধ ঘটনা। চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারিতে মোট দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে হয়েছে।
সংগঠনটি সড়ক দুর্ঘটনার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে। এসবের মধ্যে আছে ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ বা দুর্বল প্রয়োগ; নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম-দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া; মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও সড়ক-মহাসড়কে অবাধ চলাচল; রোড সাইন বা রোড মার্কিং ও সড়কবাতি না থাকা; রাতে ফগ লাইটের অবাধ ব্যবহার; সড়ক-মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি; ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার বৃদ্ধি; ফুটপাত বেদখল; যানবাহনের ত্রুটি; ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টো পথে যানবাহন চালানো; সড়কে চাঁদাবাজি ও বেপরোয়া যানবাহন চালানো।