ড. ইউনূস বিচারিক ‘হয়রানির শিকার’, বিবৃতিতে সই করব না: ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া আজ সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
ছবি: সংগৃহীত

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’

আজ সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান সিজিয়ন পিআর নিউজওয়্যার তাদের ওয়েবসাইটে গত ২৮ আগস্ট এই চিঠি প্রকাশ করে।

‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিতের দাবিতে বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রেরিত খোলাচিঠির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বিবৃতি’ লেখা কাগজে আইনজীবীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে আইনজীবীদের ‘নাম’ ও ‘স্বাক্ষর’-ঘর রয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে ১০৭ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন—যে উনাকে (ড. ইউনূস) বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে।

এর বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে—এমন দাবি করে রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’

কেন স্বাক্ষর করবেন না—এমন প্রশ্নের জবাবে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘…এটি আমার নিজস্ব চিন্তা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ শতাধিক ব্যক্তি যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে আমি একমত।’

অবশ্য অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের একাধিক আইন কর্মকর্তা বলছেন, খোলাচিঠির প্রতিবাদে বিবৃতির জন্য গতকাল রোববার থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন সাধারণ আইনজীবীরা। যার একটি কপি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকেই সই করেছেন, আবার কেউ কেউ করেননি। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে এতে সই করতে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ঢাকার বাইরে রয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে সই করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।