পুলিশ পরিচালনায় এবং বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ তদন্তে পৃথক দুটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। পুলিশকে ‘জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও আধুনিক, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিরপেক্ষ ও আইনের শাসনে অনুগত’ বাহিনী হিসেবে গঠনের লক্ষ্যে এই ২টিসহ মোট ২০টি প্রস্তাব তুলে ধরেছে তারা।
আজ রোববার এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম প্রস্তাবগুলো গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন। প্রস্তাবে রয়েছে পুলিশ বাহিনীকে সরকারের বেআইনি হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত করার জন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা। পুলিশকে জনবান্ধব করতে সদস্যের নিয়োগ, পদায়ন, পদোন্নতি, পদাবনতি (পুরস্কার ও শাস্তি) ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে বিদ্যমান আইনে পরিবর্তন আনা। পদোন্নতি, পদায়ন ও প্রশিক্ষণের একটি নীতিমালা থাকা। নীতিমালার অনুসরণসহ এসব কাজ পুলিশ কমিশন দ্বারা পরিচালনা করা। প্রশিক্ষণের আলোকে পুলিশকে পেশাদারত্বের আওতায় এনে একজন পুলিশ সদস্যের দায়িত্ব-কর্তব্য ও কর্মপরিধি ঠিক করা।
পৃথক আরেকটি কমিশনের বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়, পুলিশ বাহিনীর অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তদন্ত করার জন্য আরেকটি স্বাধীন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা উচিত। এ সংস্থায় আইনবিশেষজ্ঞ, বিচারপতি, প্রশাসন ক্যাডার, মানবাধিকারকর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং কমিউনিটি নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। সংস্থাটি নিয়মিতভাবে তদন্ত, ফলাফল এবং নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। এ কমিশনের বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়, পুলিশের দ্বারা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনকে দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কাজকর্মের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সবার জন্য উন্মুক্ত, স্থায়ী ‘অভিযোগ কমিশন’ স্থাপন করতে হবে।
পুলিশের আইন সংস্কারের বিষয়ে এইচআরএসএসের প্রস্তাবে বলা হয়, ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের পরিবর্তে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য একটি যুগোপযোগী পূর্ণাঙ্গ পুলিশ আইন প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি পুলিশকে রাজনীতিকরণ থেকে বিরত রাখতে হবে। নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে ব্যক্তির রাজনৈতিক আদর্শ, ধর্মীয় বিশ্বাস, ভাষা, লিঙ্গ, বর্ণ, সম্প্রদায় ইত্যাদি বিবেচনা পরিহার করতে হবে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।