ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট–৪’ জারি করা হয়েছে। সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলায় বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো ও খালাসের কার্যক্রমও।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামসহ তিন সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করার পর এই সতর্কতা জারি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে বিকেলে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ অ্যালার্ট–২ জারি করেছিল।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, এই সতর্কতা জারির অর্থ হলো ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য বিপদ মোকাবিলায় বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বন্দরে জোয়ারের সময় সাগর থেকে জেটিতে জাহাজ আনা-নেওয়া হয়। ভোর চারটায় জোয়ার শুরু হবে, তখনই সব জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর ছোট জাহাজগুলো কর্ণফুলী নদীর উজানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো–নামানো ও চত্বর থেকে খালাসের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বন্দরে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে।
জেটি থেকে কেন জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, জানতে চাইলে মো. ওমর ফারুক বলেন, বড় জাহাজগুলো জেটিতে থাকলে ঢেউয়ের কারণে জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা থাকে। তবে সাগরে জাহাজগুলো ইঞ্জিন চালু রেখে ঢেউ বা ঝড়ের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে ভাসতে পারে। এ জন্য দুর্ঘটনা এড়াতে বড় জাহাজগুলো সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মূলত দুর্যোগ মোকাবিলায় কখন কী করতে হবে, তা ঠিক করতে নিজস্ব প্রস্তুতির জন্য এই সতর্কতা জারি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ঘূর্ণিঝড়–পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত অনুযায়ী চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা অ্যালার্ট-১ জারি করে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর অ্যালার্ট-২ জারি করে। বিপৎসংকেত ৫,৬ ও ৭ নম্বরের জন্য বন্দরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা অ্যালার্ট-৩ জারি করা হয়। মহাবিপৎসংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরেও সর্বোচ্চ সতর্কতা বা অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়।