তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী যেন হয়রানির শিকার না হন। আইনের প্রয়োগ ঘটবে শুধু সন্ত্রাসীদের ওপরে, নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর নয়।
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী কথাগুলো বলেন। ব্রিফিংয়ে কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন ও তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চায়, আইনের প্রয়োগ ঘটবে শুধু সন্ত্রাসীদের ওপরে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী কোনোভাবে যেন হয়রানির শিকার না হন, এটি তাঁরা বলেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে ছিলেন, স্লোগান দিয়েছেন, পানি বিতরণ করেছেন, তাঁদেরও যেন কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়, তাঁদের পরিবারের কোনো সদস্য যাতে কোনোভাবে নাজেহাল না হন। সব শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতিকে তাঁরা শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু তাঁদের আবেগকে পুঁজি করে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, তারা সাধারণ শিক্ষার্থী নয়।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে বিগত দিনগুলোতে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, এ বিষয়গুলো সরকারের জন্য, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, বিশেষ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার; সবার জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং খুবই দুঃখের। সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নিজে এবং তিনি (তথ্য প্রতিমন্ত্রী) বহুবার গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, প্রতিটি হতাহতের ঘটনার জন্য নিন্দা জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে প্রতিটি হতাহতের ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিদেশি কোনো বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া হবে। এখানে তাঁরা পুরোপুরি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি থাকতে চান। প্রতিটি দায়ী ব্যক্তিকে সরকার বিচারের মুখোমুখি করতে চায়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে অন্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, চোখের সামনে সব প্রমাণ আছে। যারা নরসিংদীতে কারাগার ভেঙে কয়েদিদের বের করে নিয়ে এসেছে, জঙ্গিদের বের করে নিয়ে এসেছে, কারাগারের কর্মীদের বন্দী করে রেখেছিল, অস্ত্র লুট করেছিল, এগুলো শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। তিনি বলেন, কারা (এসব) করেছে? তৃতীয় পক্ষ, অনুপ্রবেশকারী। মেট্রোরেল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, বিটিভি, সেতু ভবন, এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজাসহ সরকারি স্থাপনায় যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। এটা করেছে সেই তৃতীয় পক্ষের সন্ত্রাসীরা। তারা শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে, শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতিকে অপব্যবহার করে তারা এ কাজগুলো করেছে। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি করার কোনো অনুমতি ছিল না। সংবিধান ও আইনের অধীনে তাদের কাজ করতে হয়েছে। তাই বলে তিনি (প্রতিমন্ত্রী) এটাও অস্বীকার করছেন না, ক্ষেত্রবিশেষে কেউ কেউ মাঠে আইন ভাঙেননি। এটা তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।