নৌকার জয়, ব্যক্তির পরাজয় হয়েছে: জাহাঙ্গীর আলম

মা জায়েদা খাতুন গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম
ছবি: দীপু মালাকার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জায়েদা খাতুন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, এখানে নৌকার জয় হয়েছে, পরাজয় হয়েছে ব্যক্তির। মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকার উপকণ্ঠের এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় তাঁর মা জায়েদা প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়। পরে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কৃত হন তিনি। কিন্তু ভোটের লড়াইয়ে কার্যত আজমত উল্লার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাহাঙ্গীর। মায়ের পক্ষে দিনরাত প্রচার চালিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে আজমত উল্লাও নির্বাচনী প্রচারে যা বলেছেন, এর প্রায় সবই ছিল জাহাঙ্গীরকেন্দ্রিক।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ করি। আমি এখানকার আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ব্যক্তি। মানুষ আমার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি ও আমার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে একটা সুন্দর শহর গড়ে তুলব।’

সমর্থকদের সঙ্গে মায়ের বিজয় উদ্‌যাপনে জাহাঙ্গীর আলম

নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনে মাকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে একটি পরিকল্পিত নগরে পরিণত করব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমার মায়ের পাশে ছিলেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

এ সময় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানকে নিয়েও কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘যাঁরা এখানে মেয়র নির্বাচন করেছেন। আমার বড় ভাই আজমত উল্লা খান এখানে নির্বাচন করেছেন। আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কারও প্রতি রাগ, ক্ষোভ নাই। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজটি করতে চাই।’

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে রাতে শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্রে ভোটের ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। তৃতীয় হওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়েছেন।

অপর মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট ও হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।