প্রয়োজন ও শখ—এই দুটি বিষয় সমন্বয় করেই সাধারণত মানুষ গাড়ি কিনে থাকেন। তাই গাড়ি কেনার আগে দেখে–শুনে–বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বারবার গাড়ি বদলের সুযোগ অনেকেরই থাকে না। ফলে বিবেচনায় রাখতে হয় নানা কিছু। নতুন যে গাড়িটা কেনা হবে, সেটি যেন নিজের সব চাহিদা পূরণ করতে পারে—সেটাই চাওয়া থাকে সবার।
২০২৪ সালে বাজারে আসা মিতসুবিশি মোটরসের ‘L-200’ মডেলের গাড়িটি বহুমুখী ব্যবহার, আধুনিক প্রযুক্তি এবং শক্তির এক অপূর্ব সমন্বয়। আমাদের দেশে পিকআপ ক্যাটাগরির এই গাড়িটি যেমন অফিসের কাজেও ব্যবহার করা যাবে, তেমনি ব্যক্তিগত কাজেও এর দৈনন্দিন ব্যবহার সম্ভব।
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যখনই আমরা কোন পিকাপের কথা ভাবি, প্রথমেই মাথায় আসে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রজেক্টের হাল্কা থেকে মাঝারি পণ্য পরিবহন সক্ষমতার বিষয়টি। জাপানি প্রযুক্তির মিতসুবিশি তার শক্তিশালী ইঞ্জিন ও উন্নত সাসপেনশন প্রযুক্তি দিয়ে এ ধারণাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এ গাড়ির আরেকটি দিক হলো, একে মড করার সক্ষমতার বিষয়টি। গাড়ি নিয়ে শৌখিন ব্যক্তিদের জন্য এটা এক অসাধারণ পছন্দ হতে পারে। যা প্রমাণ করেছে এর নতুন ডিজাইন ও স্টাইল। এর ২ দশমিক ৪ লিটারের টার্বো ডিজেল ইঞ্জিন, যা ৮১ কিলোওয়াট শক্তি প্রদান করে। ফলে যেকোনো ধরনের রাস্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম। মসৃণ মহাসড়ক হোক বা দুর্গম পাহাড়ি পথ—মিতসুবিশি L-200 দেয় নির্ভরতার আশ্বাস।
মিতসুবিশি L-200 গাড়ির বাহ্যিক নকশা এতটাই আকর্ষণীয়, প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ হতে হয়। এর ডিজাইন এতটা মার্জিত ও আধুনিক যে এটি যেকোনো আধুনিক শহরের রাস্তায় অনায়াসে মানিয়ে যায়। গাড়িটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মিতসুবিশি মোটরসের বিখ্যাত ডায়নামিক শিল্ড ডিজাইন। সামনে সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনের ‘গ্রিল’ এলইডি ডিআরএল ও এলইডি ‘ফগলাইট’–এর সমন্বয় করা হয়েছে। এর চাকা এবং বডির উঁচু নকশা শুধু রাস্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নয়, চোখের আরামও নিশ্চিত করে। L-200–এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ২২১ মিলিমিটার। এর দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ২৬৫ মিলিমিটার, প্রস্থ ১ হাজার ৮৬৫ মিলিমিটার, উচ্চতা ১ হাজার ৭৭৫ মিলিমিটার। এ ছাড়া এর বেড ইন্টেরিয়রের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৫৫৫ মিলিমিটার, প্রস্থ ১ হাজার ৫৪৫ মিলিমিটার ও উচ্চতা ৫২৫ মিলিমিটার। এর কার্গো হাইট ৮০০ মিলিমিটার। এ ছাড়া বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি ইন্টেরিয়র ডিজাইনেও আরাম এবং আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে মিতসুবিশি L-200 গাড়িতে।
এতে রয়েছে প্রশস্ত এবং বিলাসবহুল সিট, যা দীর্ঘ ভ্রমণেও আরামদায়ক। সামনের আসনে বসে খুব সহজেই এই গাড়িটির চারপাশ পরিপূর্ণভাবে দেখা যায়। ড্যাশবোর্ডটি নতুন ‘ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার’ ও ‘টাচস্ক্রিনের’ সঙ্গে সমন্বিত, যা চালকদের জন্য সহজেই ব্যবহারযোগ্য এবং আধুনিক। এ ছাড়া গাড়িটির সাসপেনশনে আনা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ডাবল উইশবোন, কয়েল স্প্রিং ও পেছনে ইলিপ্টিক লিফ স্প্রিং। যার ফলে উঁচু–নিচু কিংবা ভাঙা রাস্তায় এর যাত্রী পাবে আরামদায়ক ভ্রমণের নিশ্চয়তা।
গাড়ির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে বিবেচনায় মিতসুবিশি L-200 পিছিয়ে নেই। এই গাড়িটির নতুন সংস্করণে সম্পূর্ণভাবে নতুন ডিজাইনের সবচেয়ে উন্নত চেসিস দেওয়া হয়েছে। যা যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় গাড়িটিকে ও এর ভেতরে থাকা যাত্রীকেও দেয় বাড়তি নিরাপত্তা। উন্নত মানের জাপানি প্রযুক্তির শক্তপোক্ত এই চেসিসটি L-200 গাড়িকে আমাদের দেশের পুলিশ ও প্যারামিলিটারি বাহিনীগুলোতে ব্যবহারিত গাড়ির তালিকায় ওপরের দিকে রেখেছে। উন্নত চেসিস ও ব্রেকিং সিস্টেমের জন্য এর সামনে আছে ভেন্টিলেটেড ডিস্ক ও পেছনে আছে এলটি ড্রামস ব্রেক। এই ফিচারগুলো নিশ্চিত করে যে গাড়িটি চ্যালেঞ্জিং রাস্তাতেও চলবে নিরাপদে।
মিতসুবিশি L-200–এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এর বহুমুখী ব্যবহারযোগ্যতা। এটি সাধারণ কাজের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, আবার ব্যক্তিগত এবং ভ্রমণের প্রয়োজনেও এটি অসাধারণ। এর ‘পে-লোড’ ক্ষমতা এক হাজার কেজির কাছাকাছি এবং ‘টোয়িং ক্যাপাসিটি’ সাত হাজার পাউন্ডের বেশি। ফলে আপনি যদি ভারী পণ্য বহন করেন বা রোড ট্রিপে যান, L-200–তে নিশ্চিন্তে ভরসা করতে পারেন। উন্নত ‘ফোর হুইল’ ড্রাইভের সুবিধা এটিকে সব ধরনের রাস্তায় চলাচল করার উপযোগী করে তোলে। আপনি যদি অফ-রোড অ্যাডভেঞ্চারের শখ রাখেন, তাহলে L-200 আপনার শখ পূরণে দুর্দান্ত সঙ্গী হতে পারে। পাশাপাশি পাথুরে, বালুময়, কুয়াশাচ্ছন্ন, নুড়িময় ও কাদাময় রাস্তাতেও এটি অবলীলায় চলতে সক্ষম। এর টার্নিং রেডিয়াস ৬.২ মিটার। ফলে খুব সহজেই তুলনামূলক অল্প জায়গায় এই গাড়িটি ঘোরানো সহজ হয়।
এ সময়ে জ্বালানির সাশ্রয় এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিতসুবিশি L-200 তার উন্নত ইঞ্জিন প্রযুক্তির মাধ্যমে জ্বালানির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে। এর ‘এয়ারোডায়নামিক’ ডিজাইন এবং ‘ইঞ্জিন ম্যানেজমেন্ট’ সিস্টেম দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও জ্বালানির অপচয় কমায়। ফলে আপনি যেমন আপনার কাজ সারতে পারেন, তেমনি পরিবেশ রক্ষায়ও অবদান রাখতে পারবেন।
গাড়িটি পাওয়া যাবে মিতসুবিশি মোটরসের ঢাকা ও চট্টগ্রামের ফ্ল্যাগশিপ শোরুমে। এ ছাড়া গাড়িটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কল করতে পারেন ০৯৬৬৬৭০৪৭০৪ নম্বরে।
তাই বহুমুখী ব্যবহার, শক্তি ও আরামের সমন্বয়ে সেরা অভিজ্ঞতা পেতে মিতসুবিশি মোটরসের L-200–এর ব্যাপারে অনায়াসে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ব্যবসায়িক কাজ বা ব্যক্তিগত জীবনের অ্যাডভেঞ্চার—এই গাড়িটি আপনাকে কোনোভাবেই নিরাশ করবে না।