পাঁচ বছর আগে তরিকতভিত্তিক সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনায় চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ও তাঁর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার চট্টগ্রামের রাউজান থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আনা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটির কার্যালয়, ইবাদতখানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, নগদ অর্থ লুট, প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ও সম্পদ লুট, অগ্নিসংযোগ এবং হত্যার চেষ্টা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাউজান থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয় বলে জানিয়েছেন থানার ওসি (তদন্ত) সিদ্দিকুর রহমান।
মামলাটি করেন রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের এয়াসিন নগরের বাসিন্দা এবং মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটির ফকির টিলা শাখার সহসভাপতি মো. জোহেল উদ্দিন। এ নিয়ে সরকার পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়েছে। মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে। সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। আর তাঁর ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য।
মামলায় রাউজান উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী, পৌরসভা মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, পৌর প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, পৌর কাউন্সিলর কাজী ইকবালসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে ২০ থেকে ৩০ জনকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ছয়টার পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে আসামিরা ঘটনাস্থলে ত্রাসের সৃষ্টি করেন। এ সময় তাঁরা দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বুলডোজারসহ ঘটনাস্থলে যান। মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটির ফকিরটিলা শাখার (ইবাদতখানা) সামনে গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন তাঁরা। এরপর লোহার রড দিয়ে শাখার ডিজিটাল সাইনবোর্ড, দরজা, জানালা ও কাচ ভেঙে ফেলেন। পরে বুলডোজার দিয়ে শাখা কার্যালয়ের (ইবাদতখানা) একতলা ভবন এবং ওই ভবনের চারটি ভাড়া দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা কার্যালয়ের পাশের দোকানের মালামালসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা লুট করে নেন বলে অভিযোগ করা হয় এজাহারে। এ ছাড়া ইবাদতখানা ও কার্যালয়ের ভেতরে গানপাউডার ছিটিয়ে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি করা হয়।
মামলার বাদী মো. জোহেল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ওই কার্যালয় ও ইবাদতখানাটি জরাজীর্ণ পড়ে আছে। ওই ঘটনার বিষয়ে সে সময় স্থানীয় প্রশাসন থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতা না পাওয়ায় মামলা দায়েরে দেরি হয়। তা ছাড়া ঘটনার পর থেকে ওই সংগঠনের কাউকেই এলাকায় থাকতে দেওয়া হয়নি।