চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ ও মারধরের পাঁচটি ঘটনায় ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ছাত্র অধিকার পরিষদের এক কর্মীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় এই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় লিখিত আদেশ তৈরি করে এ তথ্য জানায় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষ ও মারধরের প্রতিটি ঘটনা ভালোভাবে যাচাই–বাছাই করেই এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপে জড়াবেন না মর্মে অঙ্গীকার দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ক্ষমা করা হয়েছে।
গত ১১ আগস্ট ছাত্রীদের আবাসিক হল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের চার নেত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হল শাখা ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক তাসফিয়া জাসারাতকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের এক নেতার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আরশিল আজিম এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শোয়েব মোহাম্মদ (আতিক)।
৮ অক্টোবর আলাওল হলের কক্ষ ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দুই ছাত্রলীগকর্মীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শহিদুল ইসলাম।
গত ২ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও রাম দা উঁচিয়ে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয় ছাত্রলীগকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন, সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম, একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন। এ ছাড়া ২৪ আগস্ট শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আটক হওয়া ছাত্র অধিকারের কর্মীক দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। ওই কর্মীর নাম জোবায়ের হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সর্বশেষ গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি পরপর দুদিন রাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপপক্ষ।এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হন। আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম। এ দুই দিনের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন, ফিন্যান্স বিভাগের স্নাতকোত্তরের আমিরুল হক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের ইকরামুল হক ও দর্শন বিভাগের একই বর্ষের নয়ন দেবনাথ। বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মাহমুদুল হাসান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ ফাহিম।