সব ধরনের গাড়ি কেনাকাটা বন্ধ, বিদেশভ্রমণ সীমিত

অর্থ মন্ত্রণালয়
অর্থ মন্ত্রণালয়

নতুন অর্থবছরের (২০২৩-২৪) শুরুতেই সরকারি কর্মকর্তাদের খরচে লাগাম টানল সরকার। সরকারি দপ্তরে নতুন সব ধরনের যানবাহন কেনাকাটা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি বিদেশভ্রমণ বন্ধ থাকবে, তবে বিদেশি অর্থায়ন হলে ভ্রমণ করা যাবে। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করা যাবে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ টাকা সাশ্রয় করতে হবে। আজ রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কয়েকটি খাতে ব্যয় স্থগিত ও কমিয়ে আনার কারণ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, করপোরেশন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

সরকারি খরচ কমাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুতেও যানবাহন, বিদেশভ্রমণসহ বেশ কয়েকটি খাতে ব্যয় স্থগিত করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। যদিও অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে বিদেশভ্রমণে যেতে দেখা গেছে। যদিও তাঁদের যুক্তি ছিল, বিদেশভ্রমণে সরকারি টাকার সম্পৃক্ততা ছিল না। তাঁরা বিদেশে গেছেন উন্নয়ন সহযোগীদের টাকায়। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গতবার বিভিন্ন কমিটির সম্মানী বাবদ ব্যয় স্থগিত করা হয়েছিল। তবে এবার এখন পর্যন্ত সম্মানী স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়নি।

পরিপত্রে বলা হয়, চলতি অর্থবছর আবাসিক ভবন, অনাবাসিক ও অন্যান্য ভবন খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ভবন নির্মাণ করে খালি ফেলে রাখায় সরকারপ্রধান বেশ কয়েকবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সে জন্য সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে ভবন নির্মাণে কোনো টাকা খরচ করা যাবে না। এ ছাড়া মোটরযান, জলযান ও আকাশযান খাতেও অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা যাবে। অর্থাৎ ২৫ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করতে হবে। এ ছাড়া গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা যাবে। এ খাতে ২০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করতে হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব ধরনের বিদেশভ্রমণ, কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। তবে অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশি কোনো সরকার বা প্রতিষ্ঠান বা উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও তাদের অর্থায়নে আয়োজিত বিদেশি প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশভ্রমণে যেতে পারবেন। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় বা দেশ থেকে দেওয়া স্কলারশিপ, ফেলোশিপের আওতায় বিদেশি অর্থায়নে মাস্টাস৴ ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়ন করতে পারবেন। এ ছাড়া ঠিকাদার, সরবরাহকারী বা পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তা ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তারা পণ্যের গুণগত মান নিরীক্ষা করার জন্য বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক খাতের অর্থ অন্য খাতে পুনঃ উপযোজন করা যাবে না। জারিকৃত এ পরিপত্র অবিলম্বে কার্যকর হবে।