চবিতে যৌন নিপীড়ন

চার কার্য দিবসের কথা মনে করিয়ে দিতে গানের আসর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারসহ চার দফা দাবি পূরণে চার কার্য দিবসের সময়সীমা মনে করিয়ে দিতে প্রতিবাদী গানের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারসহ চার দফা দাবি পূরণে চার কার্য দিবসের সময়সীমা মনে করিয়ে দিতে প্রতিবাদী গানের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার রাত নয়টার দিকে ‘আর মাত্র তিন দিন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রেলস্টেশনে এ গানের আসন শুরু হয়।

‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’, ‘কারার ঐ লৌহকপাট’,‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’— এসব গানে গলা মেলান এক শ শিক্ষার্থী। রাত সোয়া দশটা পর্যন্ত এ আসর চলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের চার দফা দাবিগুলো হলো, ক্যাম্পাসের ভেতরে ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তা দিতে হবে। ছাত্রীদের হল থেকে বের হওয়ার কিংবা প্রবেশের সময়সীমা প্রত্যাহার করতে হবে। যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ সেল ভেঙে নতুন কার্যকরী সেল গঠন করতে হবে। নতুন এ সেল ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে। বর্তমান সেলে যে তিন অভিযোগ জমা রয়েছে তার বিচার চার কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। চার কার্যদিবসের মধ্যে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচার না হলে প্রক্টরিয়াল বডির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে।

প্রতিবাদে গানের আসরে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আশরাফী নিতু প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাঁদের চার দফা দাবির পূরণের সময়সীমার কথা মনে করিয়ে দিতেই এ আয়োজন করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে গত বুধবার থেকেই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ওই রাতে এসব দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন কয়েক শ ছাত্রী। পরে চার কার্যদিবসের মধ্যে যৌন নিপীড়নে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান। এটা করতে না পারলে প্রক্টর ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে বিক্ষোভ থামিয়ে হলে ফেরেন ছাত্রীরা।

গত রোববার রাত সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। নিপীড়নের শিকার ছাত্রীর ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পোশাক ও কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে শনাক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।