সাংবাদিকেরা শোষণ-বঞ্চনার শিকার

সাংবাদিকেরা শোষণ-বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন মন্তব্য করে বিএফইউজে—বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতারা বলেছেন, দেশে অন্য পেশাজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়লেও সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা অনিয়মিত।

সাংবাদিক নেতারা আরও বলেছেন, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রেও সাংবাদিকেরা পিছিয়ে। সরকারের স্বাধীন সংবাদমাধ্যম নীতি থাকলে তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অনেকের অনীহা রয়েছে।

মহান মে দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।

নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের শোষণ-বঞ্চনার শিকার হওয়ার বিষয়গুলো সরকার জানলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

আলোচনা সভায় বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তবে সরকারের কিছু কর্মকর্তা আছেন, যাঁরা সাংবাদিকদের অধিকারের বিষয়ে উদাসীন।

সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘মে দিবসের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের তিনটি বিষয় হয়েছিল। ৮ ঘণ্টা কাজের, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম ও পরিবারের জন্য, বাকি ৮ ঘণ্টা সংগঠন করার জন্য। মে দিবস আমাদের পেশার মর্যাদা শেখায় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শেখায়।’

গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের নিপীড়ন করা হয় বলে অভিযোগ করেন বিএফইউজের মহাসচিব দীপ আজাদ। তিনি বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে সারা দেশে সমাবেশ করা হবে।’

বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, ‘আইন করবেন, বাস্তবায়ন করবেন না, সেই জায়গায় ইউনিয়নকে অবশ্যই ভূমিকা নিতে হবে। আজকে আমার মর্যাদা নেই। শ্রমিকের একটাই অস্ত্র আন্দোলন-সংগ্রাম। আজকে আন্দোলন দেখি না, সংগ্রাম নেই। আমরা সবাই মিলে আন্দোলন করলে সরকারের টনক নড়াতে বাধ্য।’

এদিকে মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে বলে উল্লেখ করেন ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের সবার বেতন বাড়ছে, কিন্তু সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা বাড়ছে না। বেতন-ভাতা পাওয়ার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। রাষ্ট্রে যতক্ষণ এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকবে, ততক্ষণ মহান মে দিবসের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়ন হবে না, সাংবাদিকদের রুটিরুজি এবং মর্যাদা রক্ষা হবে না।

বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদ উল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, ডিইউজের সিনিয়র সহসভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, দপ্তর সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, কল্যাণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান চৌধুরী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মহিউদ্দিন পলাশ, সফিকুল করিম, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ঢাকা সাব-এডিটর কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজী প্রমুখ।