স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে বক্তারা

স্বাস্থ্যসেবাকে জনসাধারণের কাছে নিয়েছেন জাফরুল্লাহ

বক্তারা বলেন, জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতি গড়ে তুলতে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান অসামান্য।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা ও স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে
ছবি: খালেদ সরকার

চিকিৎসাব্যবস্থাকে সর্বজনীন করা এবং সেবাটিকে জনসাধারণের বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সারা জীবন কাজ করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। জনবান্ধব স্বাস্থ্যনীতি গড়ে তুলতে তাঁর অবদান অসামান্য। তিনি স্বাস্থ্যসেবাকে সাধারণ জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

গতকাল রোববার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্বাস্থ্য আন্দোলন আয়োজিত ‘গণমুখী স্বাস্থ্যসেবার জন্য সংগ্রাম’ শীর্ষক এক স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে আসে। সদ্য প্রয়াত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণে এ আয়োজন করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, সমাজ ও মানুষের জন্য ভালো কিছুর জন্য জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিবাদ করতেন। তাঁকে বোঝার সক্ষমতা অনেকের নেই, এটা দুর্ভাগ্য। স্বাধীনতার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। তাঁর বাকি যে কাজগুলো রয়ে গেছে, সেগুলো সবাইকে মিলে সমাপ্ত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কবি ও লেখক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, তাঁর স্বাস্থ্যভাবনার কেন্দ্রে ছিল স্বাস্থ্যসেবা ও জরুরি ওষুধকে বাজারব্যবস্থার কবল থেকে বাইরে রাখার নীতি ও কৌশলকে গুরুত্ব দেওয়া। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে পড়তে হবে। তাঁর যে স্বাস্থ্যনীতি ছিল, সেটাকে এগিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কার সঙ্গে চললে কে কী মনে করবে, সরকার কীভাবে নেবে, এসব ভাবতেন না জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি রাজনীতির সঙ্গে যতটুকু জড়িয়েছিলেন, তা নিজের ক্ষমতার জন্য নয়, বরং মানুষের উপকারের জন্য।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী চেয়েছিলেন তাঁর দুই সন্তানই বড় চিকিৎসক হবেন, এ কথা জানিয়ে তাঁর ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিকিৎসাব্যবস্থা কেমন এবং তা কীভাবে উন্নতি করা যায়, বাবা তাঁকে সেসব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতেন।

স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণা করেন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ডা. মোজাহেরুল হক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ফয়জুল হাকিম, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহিব উল্লাহ খোন্দকার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ক মনজুর কাদির প্রমুখ। ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান কাজী কামরুজ্জামানানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বাস্থ্য আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদা আখতার।