১৪ বছরে সম্ভাব্যতা যাচাই ও কারিগরি সহায়তার ২০টি প্রকল্পে ব্যয় ৮৩৯ কোটি টাকা।
বর্তমানে ৩৬৪ কোটি টাকার এ ধরনের প্রকল্প চলমান।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বুলেট ট্রেন চালুর লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ জন্য ব্যয় হয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্পটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
বুলেট ট্রেনের মতো বৈদ্যুতিক ট্রেন, বৃত্তাকার ট্রেনসহ নানা প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে রেলওয়ে। মানুষকে দ্রুতগতির ট্রেনে চলাচলের স্বপ্ন দেখানো হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প আর নেওয়া হয়নি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ২০টি সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা ও কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলোর পেছনে ব্যয় হয়েছে ৮৩৯ কোটি টাকা।
কিন্তু সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষাগুলো শেষ করে প্রকল্প নেওয়া হয়নি। যদিও সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষায় সব কটি প্রকল্পই বাস্তবায়নযোগ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক বলে দেখানো হয়েছিল। আর কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
রেলওয়ে বড় বড় প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য টাকা খরচ করে। কিন্তু প্রকল্প আর আলোর মুখ দেখে না।
বর্তমানে রেলওয়েতে আরও আটটি সম্ভাব্যতা যাচাই ও কারিগরি সহায়তা প্রকল্প চলমান। এসব প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৬৪ কোটি টাকা।
সাধারণত বড় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের নীতিগত সম্মতি থাকার পরই কেবল সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। কিন্তু রেলওয়েতে খেয়ালখুশিমতো সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে অর্থ অপচয় করার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়। আবার কর্মকর্তারা বিদেশভ্রমণের সুযোগ পান। কিন্তু রেল লোকসান দিতেই থাকে।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন অবশ্য টাকা খরচ করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে খারাপ কিছু দেখেন না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থেকে সম্ভাব্যতা যাচাই করে রাখা হচ্ছে। এক প্রকল্প নিয়ে দু-তিনবারও সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। অর্থায়ন পাওয়ার জন্য এটা মেনে নিতে হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর রেল কেন অর্থায়ন পায় না? যেখানে অর্থায়নের অনিশ্চয়তা থাকে, সেই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই কেন হয়? আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলে নতুন করে সমীক্ষা করে প্রকল্প নিতে হয়।
বুলেট ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের খবরটি রেলওয়ে থেকেই দেওয়া হয়েছিল। তা ফলাও করে গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছিল। এ কাজে পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চীনের চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশন ও বাংলাদেশের মজুমদার এন্টারপ্রাইজকে। ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নকশা প্রণয়নসহ অন্যান্য প্রতিবেদন জমা দেয়। তারা জানায়, বুলেট ট্রেন প্রকল্প বাস্তবায়নে ৯৬ হাজার কোটি টাকা লাগবে।
সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থেকে সম্ভাব্যতা যাচাই করে রাখা হচ্ছে। এক প্রকল্প নিয়ে দু-তিনবারও সম্ভাব্যতা যাচাই হয়। অর্থায়ন পাওয়ার জন্য এটা মেনে নিতে হবে।রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন
বুলেট ট্রেনের জন্য উড়ালপথে রেললাইন স্থাপনের পরামর্শ দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। সমীক্ষা অনুসারে, ঢাকা-চট্টগ্রামের প্রস্তাবিত পথে বুলেট ট্রেনে নিরবচ্ছিন্নভাবে যেতে সময় লাগার কথা ৫৫ মিনিট।
বুলেট ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যেই চীনসহ বিভিন্ন দেশের কাছে অর্থায়নের অনুরোধ জানানো হয়। চায়না রেলওয়ে গ্রুপ ও চায়না রেলওয়ে ডিজাইন জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি) পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগ্রহ দেখায়। তবে তা আর এগোয়নি।
এবার বৈদ্যুতিক ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে রেলওয়ে। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এবং গাজীপুরের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু করার লক্ষ্য নিয়ে গত জুলাইয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সমীক্ষা শুরু হয়েছে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তুরস্কের তুমাস তার্কিশ ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং নামে প্রতিষ্ঠানকে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, বৈদ্যুতিক ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর ব্যয় আরও বাড়তে পারে।
ঢাকার কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) বৃত্তাকার রেলপথ ও পাতালরেলের (সাবওয়ে) কোনো সুপারিশ নেই। অথচ ঢাকার চারদিকে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণে ২০১৮ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। নিয়োগ করা হয় চায়না রেলওয়ে সিচুয়ান সার্ভে অ্যান্ড ডিজাইন গ্রুপ কোম্পানি এবং বাংলাদেশের বেটস কনসালটিং সার্ভিসেস লিমিটেড ও ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যাডভাইজারস লিমিটেডকে। ২৫ কোটি টাকা খরচ করে তিন বছর সমীক্ষা চালায় তারা।
সমীক্ষা শেষে পরামর্শকেরা জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭১ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পে অর্থায়ন পাওয়া যায়নি। তাই প্রকল্প হয়নি।
রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বৃত্তাকার, সাবওয়ে ও মেট্রোরেল প্রায় একই ধরনের গণপরিবহন। তিনটি একসঙ্গে ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব
একই সময় সরকারের সেতু বিভাগ ঢাকার ভেতরে ও চারপাশে চারটি সাবওয়ে নির্মাণে ২০১৮ সালে স্পেনের টিপসাসহ কয়েকটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জোট বা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি করে। এতে খরচ হয় ৩২২ কোটি টাকা। এর বাইরে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ঢাকায় ২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণে কাজ করছে। এই ছয়টি লাইনের কিছু অংশ উড়ালপথে এবং কিছু পাতালপথে যাবে।
রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বৃত্তাকার, সাবওয়ে ও মেট্রোরেল প্রায় একই ধরনের গণপরিবহন। তিনটি একসঙ্গে ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব। এত বিপুল বিনিয়োগ করাও কঠিন। ফলে সাবওয়ে ও বৃত্তাকার রেল প্রকল্পে রেলওয়ে ও সেতু বিভাগের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পগুলো অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পটুয়াখালীর পায়রা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ২০১৬ সালে প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের পর ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের জুনে নকশা প্রণয়নসহ প্রকল্পটি তৈরি করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা।
রেললাইনটি নির্মাণে ২০১৬ সালেই ডিপি রেল নামে যুক্তরাজ্যের একটি ‘ভুঁইফোড়’ কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছিল রেলওয়ে। এরপর আর বিষয়টি এগোয়নি। চীন, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের অর্থায়ন পেতে চেষ্টাও চালিয়েছিল সরকার। কিন্তু পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ-জয়দেবপুর পর্যন্ত রেলপথে ওভারপাস/আন্ডারপাস নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে (২০১৯ সালে শেষ)। এর মধ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঢাকায় দুটি ওভারপাস নির্মাণ করেছে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ চার বছরে কিছুই করেনি।
চট্টগ্রামের জালানীহাট থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেললাইন নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। দুই বছরে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এরপর রেলপথ নির্মাণে আর কোনো উদ্যোগ নেই।
জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ-জামালপুর পথে বিদ্যমান রেলপথের সমান্তরাল আরেকটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করার লক্ষ্যে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৫ সালের দিকে। ব্যয় হয় সাড়ে আট কোটি টাকা। এরপর চীনের সঙ্গে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দর-কষাকষিও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চীন সরে দাঁড়ায়। কেউ আর বিনিয়োগ করেনি।
জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে রেল সংযোগের সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিশদ নকশা তৈরিতে ২০১৭ সালে প্রকল্প নেওয়া হয়। দুই বছরে ব্যয় হয় পৌনে পাঁচ কোটি টাকা। একই সময়ে মিরসরাই-ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলে রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পূর্ণাঙ্গ নকশা প্রণয়নে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এতেও পৌনে পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু মূল নির্মাণকাজের আর কোনো খবর নেই।
নারায়ণগঞ্জ-জয়দেবপুর পর্যন্ত রেলপথে ওভারপাস/আন্ডারপাস নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে (২০১৯ সালে শেষ)। এর মধ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঢাকায় দুটি ওভারপাস নির্মাণ করেছে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ চার বছরে কিছুই করেনি।
কিন্তু অনেক সময় যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই প্রকল্প নিয়ে বাস্তবায়ন করে রেলওয়ে। রেলের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ডেমু ট্রেন কিনতে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। পরে দেখা গেছে, ট্রেনগুলো অকালে অকেজো হয়ে গেছে।
রেলে এখন সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা, চীন ও ভারত। রেলওয়ে সূত্র বলছে, এডিবি ও জাইকা প্রায়ই কারিগরি সহায়তা প্রকল্প বাস্তবায়নের শর্ত দিয়ে থাকে।
যদিও কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের সুফল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ধরনের প্রকল্পের মধ্যে মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা বৃদ্ধির মতো বিষয় থাকে। থাকে রেলের সংস্কার প্রকল্প। কিছু প্রকল্পে রেলে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আর কিছু বড় বই তৈরি এবং কিছু কর্মকর্তার বিদেশভ্রমণ ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি।
যেমন বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্কার প্রকল্প শুরু হয় ২০০৬ সালে। অস্ট্রেলিয়ার স্ম্যাক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি টেনে নেয় ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এর আওতায় পরামর্শকদের বেতন, ভাতা ও গাড়ি, মোটা মোটা বই তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৩১ কোটি টাকা।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, রেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা অবসরের পর পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি নেন। চাকরিতে থাকা অবস্থায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়া এবং পরে সেখানে চাকরিতে যোগ দিয়ে ‘তদবিরের’ অভিযোগ রয়েছে।
২০১২ সাল থেকে প্রায় তিন বছর রেলের মহাপরিচালক ছিলেন মো. আবু তাহের। অবসরে গিয়ে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়া কতটা নৈতিক, জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবসরের পর কারও চাকরি করার সামর্থ্য থাকলে তা করা তো অন্যায় হওয়ার কথা নয়।
কেন বারবার সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প নেওয়া হয়, কিন্তু প্রকল্প হয় না, জানতে চাইলে আবু তাহের বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প বেশির ভাগ ওপর মহল থেকে আসে। কিন্তু অর্থায়নের সংকটে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় না।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর রেলের উন্নয়নে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে রেলের সেবার পরিসর সংকুচিত হয়েছে। ট্রেন চলছে আগের চেয়ে কম। রেলের লোকসানের বোঝাও ভারী। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেল লোকসান দিয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহনবিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে প্রচুর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তা দেখে অনেকে প্রকল্প নিয়ে আসেন। প্রভাবশালী মহলের সামনে তুলে ধরেন।
সেখান থেকে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প প্রসব হয়। এতে টাকার অপচয় ছাড়া জনগণের কোনো লাভ হয় না। তাঁর পরামর্শ, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্বটা পরিকল্পনা কমিশনের কাছে যাওয়া উচিত। তাহলে একই বিষয়ে একাধিক সংস্থা প্রকল্প নিতে পারবে না। আর বাস্তবায়নযোগ্য প্রকল্পই নেওয়া হবে।