বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ। এর চেয়ে যন্ত্রণার কিছু নেই। আমাদের ছেলে নুরে আলম ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি। তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাহিনী। গুলি করে হত্যা করেছে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহিমকে। আরও ১৯ জন ঢাকায়, বরিশাল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ভোলা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরে আলমের জানাজায় এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজা হয়।
নুরে আলমের জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা। রাস্তা বন্ধ করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলের কারণে নয়াপল্টনের ভিআইপি রোডের এক পাশে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানাজার পর মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে নতুন নয়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একদলীয় শাসন পোক্ত করার জন্য ১৫ বছর ধরে ৬০০ নেতা–কর্মীকে গুম করেছে। ৩৫ লাখ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আর ক্রন্দন নয়, আমাদের জেগে উঠতে হবে। এই ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী জুলুম নির্যাতনকারী সরকারের হাত থেকে এই জাতিকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। শান্তিপূর্ণভাবে গণ–আন্দোলন শুরু করে নুরে আলম এবং রহিমের হত্যার প্রতিশোধ নেব।’
বক্তব্যের একপর্যায়ে বিএনপি মহাসচিব আজ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামী ৫ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত শোক পালন করার জন্য বিএনপি সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করবে, কালো পতাকা উত্তোলন করবে। ৬ আগস্ট ছাত্রদল ঢাকায় সমাবেশ করবে, ৭ আগস্ট কৃষকদল সমাবেশ করবে, ৮ আগস্ট যুবদলের উদ্যোগে সমাবেশ হবে।
গত ৩১ জুলাই ভোলায় বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে আহত হন নুরে আলম। পরে তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার তিনি মারা যান।