অস্ত্রের জোরে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে তিনি বলেন, একমাত্র নৌকা ক্ষমতায় থাকলেই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়েজিত এক নির্বাচনী জনসভায় দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার খণ্ডচিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। এই নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষের উন্নতি হয়। অস্ত্র হাতে অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলকারীরা দেশের কোনো উন্নতি করে না। তাদের সময় দেশের কোনো উন্নতি হয়নি, উন্নতি হয়েছে একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র যেখানে ২৫ ভাগ ছিল সেখানে আজকে হতদরিদ্রের হার মাত্র ৫ দশমিক ৬ ভাগ। ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশের মাটিতে কেউ হতদরিদ্র থাকবে না।’
দরিদ্র ও ভূমিহীন সব শ্রেণি–পেশার মানুষ এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে বিনা মূল্যে ঘর করে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ খেয়েপরে সুখে–শান্তিতে বসবাস করবে, সে ব্যবস্থা আমরা করে দেব। আর একমাত্র নৌকা ক্ষমতায় থাকলে এটা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। আর ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন তারুণ্যে সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। এটা হবে সেই ‘সোনার বাংলা’—যে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন জাতির পিতা একদিন দেখেছিলেন।’
তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সমাবেশস্থলে আসা ব্যক্তিদের ওয়াদা চান। জনতা সমস্বরে দুই হাত তুলে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন জানায়।
আওয়ামী লীগের সভাপতি জনসভায় ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরার নির্বাচনী আসনের দলীয় প্রার্থীদের সঙ্গে জনগণকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাঁদের জন্য ভোট প্রত্যাশা করেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের প্রার্থী আবদুর রহমান, মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী শামীম হক সভায় বক্তব্য দেন।
বেলা সোয়া তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জনসভা মঞ্চে ওঠেন, তখন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ ছাপিয়ে জনতার ব্যাপ্তি বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা নেড়ে জনতাকে শুভেচ্ছা জানালে জনগণও প্রত্যুত্তর দেয়।
এর আগে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েই ফরিদপুর পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর যেন উৎসবের নগরীর রূপ নেয়।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ৪ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে জনসভার মধ্য দিয়ে দলীয় প্রধানের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করার কথা রয়েছে।