সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ

বেনজীরের ডক্টরেট ডিগ্রি বাতিলের দাবি, পদক্ষেপ নেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়

ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার প্রোগ্রামে ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের। এরপরও ‘র‌্যাবের ডিজি’ পদ বিবেচনায় নিয়ে শর্ত শিথিল করে তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়। পরে ডিগ্রি বাতিল ও জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার জোরালো দাবি উঠলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না, তবু ডক্টরেট ডিগ্রি পান বেনজীর’ শিরোনামে গত ১৪ জুন প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ গত ২৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বেনজীর আহমেদের ডিগ্রিটি বাতিলের দাবির পাশাপাশি এর পেছনের রহস্য কী—তা অনুসন্ধানের দাবি ওঠে।

বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি সিনেটে আলোচনা হয়েছে, এটা ঠিক। তবে সিনেট অধিবেশনের কার্যবিবরণী এখনো প্রস্তুত হয়ে আমার হাতে আসেনি। এটি হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রির পদে পদে অসংগতি থাকার পরেও রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরে থাক, কোনো তদন্ত কমিটি পর্যন্ত করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, বেনজীরকে ডিগ্রি দেওয়ার নেপথ্য একজন প্রভাবশালী শিক্ষক থাকায় এখনো বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা দেখাচ্ছে না প্রশাসন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি সিনেটে আলোচনা হয়েছে এটা ঠিক। তবে সিনেট অধিবেশনের কার্যবিবরণী এখনো প্রস্তুত হয়ে আমার হাতে আসেনি। এটি হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশেন সিনেট সদস্য রণজিৎ কুমার সাহা, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম ওয়াহিদুজ্জামান, অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বেনজীরের ডিগ্রি বাতিলের প্রস্তাব করেছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা যায়, অসংগতির কারণে এর আগে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ডক্টরেট ডিগ্রি বাতিলের নজির আছে। মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য দিয়ে গবেষণাপত্র জমা দেওয়ায় ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন প্রভাষক মো. নূর উদ্দিনের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল করেছিল কর্তৃপক্ষ।
বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম এ ফায়েজ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রভাবশালী কারও জন্য এভাবে ডক্টরেট প্রোগ্রামের শর্ত শিথিল করা ঠিক হয়নি। শর্ত শিথিলের সুযোগই তো থাকার কথা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ডিগ্রির বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে পারে।