চট্টগ্রামে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার মো. মুস্তাকিম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। এ সময় মা নাসরিন আক্তার ও মুস্তাকিম কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে মা–ছেলে দুজনই মামলা প্রত্যাহার ও অভিযুক্ত পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিচার দাবি করেন।
এর আগে আজ দুপুরে মুস্তাকিমের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহ। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবীসহ চট্টগ্রামে অর্ধশত আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেন।
ডায়ালাইসিস ফি কমানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রোগীর স্বজনেরা। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিক্ষোভকারীদের। এ সময় মুস্তাকিমকে আটক করে পুলিশ। আজ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কারাফটকে গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকার সংগঠনসহ মায়ের পাশে যাঁরা দাঁড়িয়েছেন, সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান মুস্তাকিম।
পরে মুস্তাকিম বলেন, সাত বছর ধরে মায়ের ডায়ালাইসিস করছেন। দিনে চারটি টিউশনি করে তিনি খরচ জোগাড় করতেন। ডায়ালাইসিস ফি বেড়ে যাওয়ায় অন্য রোগীর স্বজনদের সঙ্গে তিনি প্রতিবাদে শামিল হন। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়।
কারাফটক থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুস্তাকিমকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে মা নাসরিন আক্তারকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। এ সময় মা–ছেলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও ওসির বিচার দাবি করেন নাসরিন আক্তার।
এ সময় মুস্তাকিমকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখায় ক্ষতিপূরণ এবং তাঁর মায়ের চিকিৎসার ব্যয় রাষ্ট্রকে বহনের দাবি জানান হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া হাবিব আহসান।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।