দুই দিন বৃষ্টি চলবে, এরপর কমবে

আবহাওয়া অধিদপ্তর
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের পর রংপুরে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দুই দিন ধরে রংপুর অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি বেড়েছে রাজধানীসহ মধ্যাঞ্চলেও। আকাশ কালো করা মেঘের মধ্যেও ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী দুই দিন বৃষ্টি চলবে। এরপর দু–তিন দিনের বিরতি দিয়ে আবারও বৃষ্টি বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত জুলাই ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে উত্তপ্ত মাস। এর আগের তিন মাসজুড়ে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে দক্ষিণ এবং পূর্ব এশিয়াজুড়ে ছিল প্রচণ্ড গরম। আগস্টের শুরুতে অঝোর ধারায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে রেকর্ডভাঙা বৃষ্টির রেশ এখনো আছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গতকাল রোববার রাজধানীতে বৃষ্টির তীব্রতা বেশি থাকলেও তা আজ সোমবার কমতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগেও বৃষ্টি কিছুটা কমেছে, তা আজও অব্যাহত থাকতে পারে। তবে দেশের অন্যান্য এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতা বাড়তে থাকায় গরমের অনুভূতিও বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, আগামী দুই দিন বৃষ্টি খুব একটা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী বুধবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি বৃষ্টি চলবে। এরপর কয়েক দিনের বিরতি দিয়ে আবারও বৃষ্টি বাড়তে পারে। এই মাসের বেশির ভাগ সময়জুড়ে বৃষ্টি চলবে বলে তিনি জানান।

এদিকে জাতিসংঘ শিশু তহবিল বলছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে গ্রীষ্মের পরে বর্ষা মৌসুমেও গরমের তীব্রতা রয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। এখানকার ৭৬ শতাংশ শিশু গরমের কারণে কষ্ট পাচ্ছে। তারা বছরে গড়পড়তায় ৮৬ দিন তাপপ্রবাহের মধ্যে থাকছে। অর্থাৎ তারা দিনে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার মধ্যে থাকছে। এতে শিশুরা বেশি ঘামছে। এ কারণে দুর্বল হয়ে পড়ছে। একই সঙ্গে নানা ধরনের রোগবালাইয়ের শিকার হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে পরিকল্পনা তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মেঘ–বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতাও বেড়েছে। ফলে দিনভর আকাশে মেঘ আর থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও গরম সেভাবে কমছে না। এমনকি বৃষ্টি চলার সময়েও গরমের তীব্রতা কমছে না। দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টি হলেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসেবে, গতকাল রোববার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে—১০১ মিলিমিটার। ঢাকাতেও সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে চট্টগ্রামে গত তিন দিনের মতো বৃষ্টি কমেছে, সারা দিনে সেখানে ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় ৫০ মিলিমিটারের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ছিল। তবে চট্টগ্রাম বিভাগে অপেক্ষাকৃত বেশি গরম ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সোমবার চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।