মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমানের বাসার লিফটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে মারধর করার ঘটনায় আলোচিত কর্মকর্তা মো. আজিজুল ইসলাম এবার পাল্টা মামলা করেছেন। মামলায় তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগ এনেছেন।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বৃহস্পতিবার আজিজুল ইসলাম এ মামলা করেন।
আজিজুলের আইনজীবী তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূরকে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আনিছুর রহমানকে দুই নম্বর ও প্রকল্প পরিচালক অসিম কুমার দাসকে তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, আজিজুল ইসলাম গত ২৪ জুন সকাল ১১টায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে যাচ্ছিলেন। কৃষি সম্প্রসারণ ও কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) মাঝামাঝি এলাকায় আনিছুর ও অসিম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর গাড়ির গতি রোধ করেন। গাড়ি থেকে নেমে এলে আজিজুলকে জাপটে ধরেন আনিছুর। ওই সময় মলয় হত্যার জন্য আজিজুলের গলা চেপে ধরেন। আর অসিম তাঁর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আজিজুলের পিঠে আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। এ সময় ভুক্তভোগীর পকেট থেকে ২২ হাজার টাকা চুরি করেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চাকরির বিধিবিধান অনুযায়ী অবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলার যে প্রক্রিয়া আছে, তা চালু করতে হবে।
এর আগে গত ১৩ জুন রাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর রাজধানীর পরীবাগ এলাকার বাসার লিফটে মলয় কুমার শূরকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগ ওঠে আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। পরদিন শাহবাগ থানায় আজিজুলের বিরুদ্ধে মলয় কুমার হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। সহকর্মীকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগে মামলা হলে আজিজুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এখন আজিজুলের পাল্টা মামলার প্রসঙ্গে আনিছুর রহমান বলেন, এমব অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। মলয়ের করা মামলা থেকে বাঁচার জন্য আজিজুল পাল্টা মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত অসিম কুমার দাস বলেন, ‘মন্ত্রীর বাসার লিফটে মলয় কুমারকে মারধর করে গুরুতর আহত করার পর তাঁকে চিকিৎসা করতে নিয়েছি। পরে এ ঘটনায় যে মামলা হয়েছে, তাতে আমাদের সাক্ষী হিসেবে নিতে পারে। এ জন্যই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আজিজুল। এসব তদন্ত করলেই বের হবে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রেয়াজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজিজুলকে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।