ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের জামিন হয়নি। তাঁর জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখা হয়েছে। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ওই মামলায় জামিন চেয়ে রফিকুল আমীন হাইকোর্টে আবেদন করেন, যা গত বছরের ২ মার্চ খারিজ হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন রফিকুল আমীন। গত বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগ এক আদেশে জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে থাকা ওই মামলার বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেন।
আজ লিভ টু আপিলসহ রফিকুল আমীনের জামিন আবেদন আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে রফিকুল আমীনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানিতে ছিলেন।
পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই মামলায় ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১০৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাকি সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হবে। আদালত ওই মামলায় রফিকুল আমীনকে জামিন না দিয়ে তাঁর আবেদনটি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন।’
রফিকুল আমীনের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘রফিকুল আমীন শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ কারণে তাঁর জামিন চাওয়া হয়। আদালত জামিন না দিয়ে আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।’
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা হয়। মামলা দুটিতে মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
দুই মামলার মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের ওই মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে রায় দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক। রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রফিকুলকে ১২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন রফিকুল। হাইকোর্ট গত বছরের ২২ জুন আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে রফিকুলের ক্ষেত্রে ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড স্থগিত করেন। অপর মামলাটি এখন বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।