চট্টগ্রামের পাথরঘাটার ব্রিক ফিল্ড রোডের জনতা ফার্মেসির কর্মচারী অনুপম ঘোষের চোখেমুখে তখনো আতঙ্ক। মৃত্যুর দুয়ার থেকে সদ্য ফিরেছেন এই তরুণ। মুখে আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার দুই ঘণ্টা পরও তাঁর হাত–পায়ে কাঁপুনি থামেনি। শুধু বললেন, ‘ভয়াবহ ঘটনা। মনে করতে চাই না।’
ওই সড়কের জনতা ফার্মেসির মালিক যীশু নাথ বলেন, ‘রিকশায় থাকা দুজন নারীর নিথর দেহ আমার দোকানের ভেতরে গিয়ে পড়ে। তাঁদের পরিচয় জানি না।’
আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটা এলাকার ধনা বড়ুয়ার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৭ জন। আহত হয়ে আরও অন্তত ১০ জন কাতরাচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে।
দুর্ঘটনাস্থলের কাছে দাঁড়িয়েই কথা হয় অনুপম ঘোষের সঙ্গে। বিস্ফোরণের ভয়াবহতার নিদর্শন তখনো আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
জনতা ফার্মেসির মালিক যীশু নাথ বলেন, ‘কর্মচারী দোকান খুলেছে। আমি একটু দূরে ছিলাম। দোকানে আসছিলাম। হঠাৎ শুনি বিকট শব্দ। কেঁপে ওঠে চারদিক। দৌড়ে গিয়ে দেখি আমার দোকানে ঢুকে গেছে পাশের ভবনের দেয়াল।’
আজ রোববার সকালের ঘটনাটি সত্যি ভয়াবহ। বিকট শব্দে পাশের বড়ুয়া ভবনের একটি দেয়াল এসে ঢুকে পড়েছে জনতা ফার্মেসি এবং পাশের স্টুডিও ফটোরমা নামের দোকান দুটির ভেতরে। শুধু দেয়াল না, ভবনটির ফটকসহ এসে পড়ে। রাস্তায় থাকা রিকশা এবং পথচারীরাও চাপা পড়ে এই দেয়ালের নিচে।
ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ চালিয়ে হতাহত লোকজনকে উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে গ্যাসলাইন থেকে বিস্ফোরণের পর দেয়াল ধসে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’
বড়ুয়া ভবন এবং বাদশা মিয়া ভবনের মাঝখানে প্রায় ২০ ফুটের একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল করছিল। ছিল পথচারীরাও। বড়ুয়া ভবনের দেয়াল বাদশা মিয়া ভবনের নিচতলার দোকানগুলোর ওপর পড়ে।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে বিস্ফোরণে দেয়ালধস, নিহত ৭
চট্টগ্রাম বিস্ফোরণে অপরাধী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা: মেয়র নাছির
‘আর ন কাঁদিস’