‘জীবনে প্রথম ভোট দিয়ে ভালো লাগছে। কোনো দিন ভাবতে পারি নাই ভোট দিতে পারব।’ কথাগুলো কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়ার ছিটমহলের ষাটোর্ধ্ব মোক্তার আলীর। তিনি বলেন, ‘বুইড়া বয়সোৎ এমপি ভোট দিয়া খুব আনন্দ পাইছি ভাইজান।’ ওই এলাকার টংকার মোড়ের রুজিনা বলেন, ‘ভোট দিমার পামো চিন্তাই করি নাই। যাই হামাক পরিচয় দিছে তার প্রার্থিক ভোটটা দিছি।’
কুড়িগ্রামে ১২টি ছিটমহলের মধ্যে ১১টি ছিটমহলে মানুষ বসবাস করে। এখানে ১ হাজার ৮০০ পরিবারে প্রায় ৯ হাজার মানুষ রয়েছে। মোট ভোটার প্রায় ৪ হাজার। এর মধ্যে দাসিয়ারছড়ায় ভোটারসংখ্যা ৩ হাজার ১৭২।
দাসিয়ারছড়ার মানুষ ৫টি ভোটকেন্দ্রে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে পশ্চিম কুটি চন্দ্রখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব চন্দ্রখানা উচ্চবিদ্যালয়, চন্দ্রখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটিয়াবাড়ি ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ছড়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে পূর্ব চন্দ্রখানা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, এই কেন্দ্রে ৩ হাজার ৬৮৮ ভোটের মধ্যে ১ হাজার ৮ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখানে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রাশমেলা গ্রামের আজিজুল হক জানান, এই কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন ভোটার তাঁদের ভোট দিতে এসে জানতে পারেন, তাঁদের ভোট আগেই দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ভোট না দিয়েই ফিরে যান।
পার্শ্ববর্তী ১ নং আটিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা দেড়টায় ২ হাজার ৭০০ ভোটের মধ্যে ২ হাজার ১০০ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখানে শান্তিপূর্ণভাবে সবাই ভোট দিতে পেরেছেন বলে জানান টংকার মোড় এলাকার মোক্তার আলী, ফিরোজ, ফাতেমা ও রুজিনা।
এখানে সকাল আটটা থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালে ছিল ভোটারদের দীর্ঘ সারি। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। বেশ কিছু কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ ওঠে। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। কোথাও বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।