রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন তাঁর শিক্ষক ও সহপাঠীরা। মেধাবী এই ছাত্রের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তাঁর শিক্ষকেরা। প্রিয় বন্ধুর মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকাতুর তাঁর সহপাঠীরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় বিইউপিতে ক্লাস ছিল আবরারের। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি। ক্লাসে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নর্দ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিইউপির বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাঁকে চাপা দেয়। তিনি বাসের চাকায় পিষ্ট হন। পরে তাঁর লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ বিকেলে বিইউপিতে আবরারের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
দুর্ঘটনার পর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন আবরারের সহপাঠী, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে স্লোগান দেন। সহপাঠীরা কিছুতেই ভাবতে পারছেন না, কিছুক্ষণ আগেও প্রাণোচ্ছল ছিল যে মানুষটি, তিনি আর নেই। পরে প্রগতি সরণির দুই পাশে সড়ক অবরোধ করে বিইউপিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে যানবাহন ভাঙচুরের মতো কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি দোষী বাসচালকের শাস্তি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্লোগানও দিচ্ছেন তাঁরা।
বিইউপির একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুব শান্ত ও অমায়িক স্বভাবের ছিলেন আবরার। কারও সঙ্গে কখনো মনোমালিন্য হতো না তাঁর। সহপাঠীদের সবার সঙ্গেই ভালো বন্ধুত্ব ছিল তাঁর।
আবরারের শিক্ষক বিইউপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শায়লা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল দুপুর আবরারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল আমার। অথচ আজকে সে আর আমাদের মধ্যে নেই। এটা ভাবতেই পারছি না।’ প্রিয় এই ছাত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক কথায় মনে রাখার মতো ছাত্র ছিল আবরার। যেমন পড়াশোনায়, তেমনি আচার-আচরণে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতাতেও তাঁর সরব উপস্থিতি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব প্রতিযোগিতায় আবরার প্রথম হতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ বিকেলে বিইউপি ক্যাম্পাসে আবরারের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝাচ্ছি, তারা যেন শান্ত থাকে।’
আরও পড়ুন:
ঢাকায় বাসচাপায় ছাত্র নিহত, সড়ক অবরোধ