সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিতে কেউ দেখেননি বলে দাবি করেন আসামির আইনজীবী। ছাদে নুসরাতের গায়ে আগুন দিতেও কেউ দেখেননি। কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীও নেই দাবি করেছেন আসামি উম্মে সুলতানা পপির কৌঁসুলি হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ।
গতকাল সোমবার ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান হত্যা মামলার আসামি উম্মে সুলতানার পক্ষে যুক্তিতর্কের সময় ফারুক আহম্মদ এ দাবি করেন। উম্মে সুলতানা নুসরাতের সহপাঠী ও আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন।
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নবম দিন পার হলো। আজ মঙ্গলবার এ মামলায় অন্য আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
গতকাল হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফারুক আহম্মদ উম্মে সুলতানা ছাড়াও আসামি শাহাদাত হোসেন শামীম, কামরুন নাহার মণি, জোবায়ের আহম্মদ, হাফেজ আবদুল কাদের, ইফতেখার উদ্দিন রানা ও নুর উদ্দিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তাঁকে সহায়তা করেন ফেনীর আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান, মোহাম্মদ ইসহাক ও মো. সিরাজুল ইসলাম।
গতকাল আসামি মাকসুদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, নুসরাতের গায়ে আগুন লাগানোর সময় মাকসুদ আলম ফেনী ছিলেন না। কোনো সাক্ষী তাঁর নামও বলেননি। আইনজীবীর দাবি, নুসরাতের মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক রিপোর্ট, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার কথা বলা হয়নি। দাহ্য পদার্থে নুসরাত নিহত হয়েছে। এটি আত্মহত্যাও হতে পারে বলে আইনজীবী দাবি করেন।
আদালতে আইনজীবী ফারুক আহম্মদ দাবি করেন, ৪ এপ্রিল রাতে মাদ্রাসায় নুসরাত হত্যার কথিত পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হতে কেউ দেখেননি। কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই। অভিযোগপত্রে কালো বোরকার কথা উল্লেখ করা হলেও আসামি উম্মে সুলতানার বাড়ি থেকে একটি নেভি ব্লু রঙের বোরকা উদ্ধার করা হয়। ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে নুসরাতের কাছ থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য একটি সাদা কাগজে সই আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ ধরনের কোনো কাগজ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় মামলা করেন তাঁর ভাই। মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।