>
- কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন
- প্রথমবারের মতো ভোট দিতে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নৌকার সমর্থক এক তরুণের মৃত্যু
- ২২ বছরের ওই তরুণ জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে গিয়েছিলেন
কক্সবাজারের পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আবদুল্লাহর নিথর দেহ পড়ে আছে। বাইরে মা আয়েশা বেগম বিলাপ করে কাঁদছেন। বলছেন, ‘কিল্লা অ পুত ভোট দিত গিয়ছ’ (কেন তুই ভোট দিতে গেলি ছেলে)। ২২ বছরের ওই তরুণ জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে গিয়েছিলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভোটারের মধ্যে আবদুল্লাহ ছিলেন একজন। রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠনগুলো থেকে বলা হচ্ছিল, তরুণ ভোটাররাই এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। ভোটে কে জিতল আর কে হারল, তা দেখে যেতে পারলেন না আবদুল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় নৌকা ও ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান আবদুল্লাহ। তাঁর মাথায় দায়ের কোপ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠির আঘাতের চিহ্ন ভোটের রাজনীতির নির্মমতার সাক্ষ্য দিচ্ছে।
আবদুল্লাহর ভাই আবদুল মালেক বলেন, তাঁরা সবাই নৌকার সমর্থক। কিন্তু কেউ সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার আনন্দ নিয়ে কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিলেন আবদুল্লাহ। এটুকু বলার পরই কাঁদতে থাকেন তিনি। নিজেকে সামলে নিয়ে পরে জানান, আবদুল্লাহ চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসায় আলিমে পড়েন। মাদ্রাসায় ভর্তির আগে তিনি হাফেজি পড়েছিলেন।
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলম বলেন, পরাজয় নিশ্চিত জেনে ধানের শীষের প্রার্থীর লোকজন হত্যাযজ্ঞে নেমে পড়েছেন।
তবে ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমেদ বলেন, যে কেন্দ্রের সামনে আবদুল্লাহ মারা গেছেন, সেই কেন্দ্রসহ ৫০টি কেন্দ্র থেকে তাঁদের পোলিং এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সমর্থকদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। ফলে তাঁদের লোকজনের ওই সংঘর্ষে জড়ানোর কোনো কারণ নেই।
গতকাল দুপুর ১২টায় পেকুয়া হাসপাতালে গিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক সাত কর্মীকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেল। আরও কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসক মুজিবর রহমান।