'কামাল হোসেনের মতো ব্যক্তি কীভাবে মিথ্যাচার করেছেন?'

জাহাঙ্গীর কবির নানক। ফাইল ছবি
জাহাঙ্গীর কবির নানক। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ড. কামাল হোসেনের মতো প্রবীণ ব্যক্তি কীভাবে বিএনপির মতো সুরে মিথ্যাচার করেছেন? তিনি বিএনপির এজেন্ট না থাকার কথা বলেছেন, অথচ সাতটি আসনে উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় বিএনপির এজেন্ট না থাকারই কথা। যেখানে প্রার্থিতাই নেই, সেখানে এজেন্ট থাকবে কীভাবে?

আজ রোববার আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নানক এ কথা বলেন। বেলা সোয়া ১১টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী অথবা তাঁদের এজেন্টদের ওপর জোর–জবরদস্তি করা হয়েছে—এমন কথা বলতে পারবেন কেউ? সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনে অযোগ্য যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজার আসামিদের পরিবার, জঙ্গিবাদের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের মনোনয়ন দিয়ে বিএনপির দেউলিয়াত্ব প্রকাশিত হয়েছে।

এ সময় জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে সারা দেশে অন্তত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট উৎসবে শামিল হয়েছেন। ভোটকেন্দ্রগুলোয় ভোটারদের সরব উপস্থিতি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি। জনগণ স্বাধীনভাবে তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। ভোটদানে কোনো ধরনের ভয়ভীতির ঘটনা ঘটেছে—এমনটা লক্ষ করা যায়নি। জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে আরও শক্তিশালী করবে।’

এবারের সংসদ নির্বাচনে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং একাধিক জোট অংশগ্রহণ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক সংলাপ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত করেছিলেন, যা দেশের জন্য অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও প্রশংসার দাবি রাখে।

ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কারণে জনগণ বিএনপি-জামায়াত–ঐক্যফ্রন্টকে বর্জন করেছে—এমনটা দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জনগণ বিএনপির ডাকে কোনো সাড়া দেয়নি। বিএনপি, জামায়াত, অশুভ জোট জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায়ও নামতে পারেনি। বিএনপি, জামায়াত, ঐক্যফ্রন্ট অশুভ জোট নির্বাচনের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরেছে। তারা সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগের রাতে বিএনপি–জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জের ধরমপাশায় আওয়ামী লীগের সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের পটিয়ায় যুবলীগের দীন মোহাম্মদ, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে একজন, লক্ষ্মীপুরের দত্তপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী নিহত ও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের হামলায় রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাছিরউদ্দীন নিহত হয়েছেন এবং ১১ জন আহত হয়েছেন। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশের রাইফেল ছিনতাই করেছে। তিন পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে।

রাজশাহী, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, সীতাকুণ্ড, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে বিএনপি–জামায়াতের দ্বারা সংগঠিত বিভিন্ন হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বিএনপি–জামায়াত একদিকে সারা দেশে সন্ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে মিডিয়ার সামনে লাগাতার মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মোহাম্মদপুরে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে সিল মারার মতো কী নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। মোহাম্মদপুরে ইভিএম পদ্ধতির মাধ্যমে ভোট গ্রহণ চলছে, সেখানে কীভাবে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে সিল মারা যায়? কণ্ঠ নকলের মেশিন আবিষ্কারের মতো, ইভিএম পদ্ধতির ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপার আবিষ্কারের মতো একের পর এক হাস্যকর অভিযোগ করে যাচ্ছেন তিনি। তাঁদের মতো মিথ্যাবাদী এখন দণ্ডিত দুর্নীতিবাজদের মুখপাত্র।’

ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী সালাউদ্দিন আহমেদকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে—বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এ–জাতীয় কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তাঁরা এ বিষয়ে জানেন না।